বগুড়া শহর পাশ্ববর্তী শাজাহানপুর উপজেলার ফুলতলা বাজার এলাকার পাঁচ তলা তালুকদার কমপ্লেক্স ভবনে জামায়াত নেতার ফ্ল্যাট জবরদখলের অভিযোগে আদালতে মমলা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আনোয়ারুল হক নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি শাজাহানপুর থানা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বাদীর আবেদন ও জবানবন্দি গ্রহণ করে বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের আদেশ দেন আদালতের বিচারক। মামলা নং ৪৮২সি/২০২৪ শাজাহানপুর। মামলার বিবাদী মতিয়ার রহমান ফুলতলা বাজার এলাকার মৃত আনছার আলী তালুকদারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়,জামায়াত নেতা আনোয়ারুল হকের কন্যা সাফিয়া ফেরদৌসি সানি তার স্বামী ডা. মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। শাজাহানপুর উপজেলার ফুলদীঘি মৌজার ফুলতলা বাজারের তালুকদার কমপ্লেক্সের সম্পত্তি ও ভবন ডা. মাহবুবুর রহমান পৈত্রিক সূত্রে ভোগদখল অবস্থায় ২০১৬ সালে হেবার ঘোষণা মূলে স্ত্রী সাফিয়া ফেরদৌসি সানির নামে হস্তান্তর করে দেন। যুক্তরাজ্যে বসবাস করার কারণে সম্পত্তি ও ভবন দেখভালের জন্য বাবা জামায়াত নেতা আনোয়ারুল হককে শাজাহানপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্টি মূলে ক্ষমতা প্রদান করেন কন্যা সাফিয়া ফেরদৌসি সানি। আরো জানা যায়,তালুকদার কমপ্লেক্স ভবনে নিজ কন্যার পাঁচটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে ছিলেন জামায়াত নেতা আনোয়ারুল হক। তার কন্যা ও জামাই যুক্তরাজ্যে বসবাস করার সুযোগে ফুলতলার মতিয়ার রহমান ফ্ল্যাট থেকে ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে দিয়ে জোর পূর্বক অবৈধ দখল করেছে। বিষয়টি জানার পর গত ৩ সেপ্টেম্বর কয়েকজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াত নেতা নিজ কন্যার ফ্ল্যাটে যান। পাঁচটি ফ্ল্যাট জবরদখল করার কারণ জানতে চাইলে বিবাদী মতিয়ার রহমান স্থানীয় কিছু উশৃংখল ও সন্ত্রাসী ডেকে এনে জামায়াত নেতাকে হামলার চেষ্টা করে এবং ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিলে জামায়াত নেতা ও তার কন্যাকে ওই পাঁচটি ফ্ল্যাটে আসতে দেয়া হবে বলে নানা হুমকি দেয়।
এঘটনায় শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।
জামায়াত নেতা বলেন, আমার কন্যার পাঁচটি ফ্ল্যাট জবরদখল করে রেখেছে ফুলতলা বাজারের ভূমিদস্যু মতিয়ার রহমান। জায়গা-ভবন দখল করার জন্য আওয়ামী সরকার আমলে আমার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে চরম ভাবে হয়রানি করেছে। ফুলতলার সেই মতিয়ার আওয়ামী লীগের লোক। এখন দেশে স্বৈরশাসক নেই,রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিয়ে বল প্রয়োগ করতে চাই না। কারণ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুশৃঙ্খল এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনগত ভাবে আমার কন্যার পাঁচটি ফ্ল্যাট উদ্ধারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। ফুলতলা বাজারের ভূমিদস্যু মতিয়ার রহমান আওয়ামী লোক হলেও বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী ও স্বৈরাচার বিরোধী বিভিন্ন সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের বাড়ি দখল করতেই এর আগে আমার বিরুদ্ধে নাশকতা-বিস্ফোরকসহ অন্তত ৬টি ভূয়া মামলা প্রদান করা হয়। আওয়ামী সরকার পতনের পরও ফ্ল্যাটের জবরদখল ছাড়েনি এই ভূমিদস্যুরা। রাজনৈতিক বল প্রয়োগ না করে বেদখল হওয়া ৫টি ফ্ল্যাট উদ্ধারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে মতিয়ার রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।