বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা এখনো দেশে আছে। তাদের চিহ্নিত করে প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে।
আজ শনিবার বিকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক স্মরণসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একথা বলেন।
প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্মরণসভায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লব অবিস্মরণীয় উল্লেখ করে আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, শহিদদের আত্মত্যাগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ২৪ এর গণবিপ্লবের মাধ্যমে দেশ স্বৈারাচার মুক্ত হলেও আমাদের আরো অনেক পথ বাকি। সেপথ ভালোভাবে পাড়ি দিতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যে পর্যন্ত ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হবে সে পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তারেক রহমান আরো বলেন, দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি ব্যবস্থা থাকলে যারাই সরকার পরিচালানা করবে তারা জনগণের কথা চিন্তা করবে। এ কারণে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের এতো ত্যাগ, তিতিক্ষা ও আন্দোলন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশকে স্বনির্ভর করে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে সামগ্রিকভাবে একটি সম্ভাবনাময় দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশের মানুষের সামনে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। আমাদের আঞ্চলিক উৎপাদন সম্ভাবনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, তার দল বিশ্বাস করে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে সকল সংস্কার প্রস্তাবের সাথে সাথে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার অর্জনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অধিকারও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তারেক রহমান জাতির কাছে ৩১ দফা উপস্থাপন করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এখানে অনেক কিছু আছে। আজকে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে একে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হবে। শুধু রাজনৈতিক মুক্তিই সব সুফল বয়ে আনবে না। দেশকে সামগ্রিকভাবে সম্ভাবনাময় হিসেবে গড়ে তুলতে হলে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে হবে।
সিরাজগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যদি আশেপাশের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দের নাম আসলেই তাঁত শিল্পের কথা চলে আসে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল কৃষি, তাঁত শিল্প, পাট শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল।
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের মানুুষের ভোটে ক্ষমতায় আসলে বিএনপি তাঁত শিল্পের পাশে এসে দাঁড়াবে। এই শিল্প কিভাবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যায় সেবিষয়ে আমরা গুরুত্ব দেবো।
স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং জেলা বিএনপির সভানেত্রী রোমানা মাহমুদ।
সভায় কয়েক কিলোমিটার দূরে চৌহালী উপজেলা থেকে ট্রলার এবং ছোট ছোট নৌকা দিয়ে যমুনা নদী পার হয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ স্মরণসভায় যোগ দেন। এছাড়াও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নৌ ও সড়কপথে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেন।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বনি আমিন ও এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জু সিকদারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, উপদেষ্টা ডা. এমএ মুহিত, বেলকুচি উপজেলার আহবায়ক নুরুল ইসলাম গোলাম, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলতাব প্রামাণিক, এনায়েতপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মন্টু সরকার, চৌহালী উপজেলার সভাপতি জাহিদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ময়নাল ক্বারী, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কায়েস, ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ, মহিলা দলের সভানেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন হাসি প্রমুখ। সূত্র: বাসস