আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনের সময় বগুড়া শহরে জাবেদ মিয়া (৩০) কে হত্যার অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাগিবুল আহসান রিপু, সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মোস্তফা আলম নান্নু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুল রহমান দুলু, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল এ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ঝুনু, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিন ও সাধারণ সম্পাদক ববি, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা আবু সুফিয়ান সফিক, মাহফুজুল ইসলাম রাজসহ আওয়ামীলীগ, কৃষকলীগ, যুবলীগ, স্বেছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীসহ ৯১ জনের নাম এবং আরো অজ্ঞাতনামা ১২০ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করে বগুড়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই আদালতের বিচারক সুকান্ত সাহা মামলাটির অভিযোগ তদন্ত করে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর আদেশ প্রদান করেন।
এই মামলার অপর আসামিরা হলো, জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, সহ সভাপতি ফেরদৌস মাহমুদ সেলিম, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ শেখ, বগুড়া পৌর সভার ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান আরিফ, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সরকার, ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম মন্ডল, সাবেক শহর শ্রমিক লীগের সভাপতি তুফান সরকার, সদস্য আলাল, জেলা স্বেছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক রিপন, বগুড়া শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান আতা, বগুড়া শহর স্বেছাসেবকলীগের আহবায়ক মেজবাহুল আলম, ছাত্রলীগ সরকারি শাহসুলতান কলেজ শাখার আতিক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ স্বাধীন, সহ-সভাপতি মোঃ আপন, শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু, বগুড়া শহর স্বেছাসেবকলীগের সভাপতি নাসিমুল বারী নাসিম, বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ ওরফে ফ্রেম মান্নান, সারিয়াকান্দি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ, খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক সম্পাদক শাহাদত হোসেন, চন্দনবাইশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাদত হোসেন দুলাল সহ ৯১ জনের নাম উলেখ করা হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দেউতি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে বর্তমানে বগুড়া শহরের চকলোকমানের বাসিন্দা মোঃ চাঁনমিয়া বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনের ব্যানারে সকল ছাত্র জনতা অংশ গ্রহণ করে বিক্ষোভ মিছিল সহ প্রতিবাদ করে। গত ৫ আগস্ট আসামি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ রাগেবুল আহসান রিপু, শহরের সাতমাথা হতে বনানীগামী জামিল মাদ্রাসার গেটের সামনে পাকারাস্তায় আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর ককটেল, বোমা নিক্ষেপ করলে ছাত্র জনতা বনানী পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। এই পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ গ্রহন কারী ছত্র-জনতার হাত থেকে জীবন রক্ষার জন্য পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গুলি ও টিয়ার সেল ও রবার বুলেট ছুড়লে জাবেদ মিয়ার মাথায় গুলি লেগে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে পড়ে যায় একই সাথে সিনবাদ, মিঠুন, তৌফিক, ইউসুফ, সফিক, সূর্য আহত হয়। আহত জাবেদ মিয়াকে বগুড়া শহীদ জিয়াইর রহমান মেডিকেল কলেজ শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ ৭ দিন হাসপাতাল মর্গে রাখার পর ১২ আগস্ট সুরতহাল করার পর বেওয়ারিশ হিসেবে দক্ষিণ বগুড়া গোরস্তানে দাফন করা হয়।