প্রকাশিত : ১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:৪০
বীরগঞ্জে ২ কিশোর হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১ সাবেক এমপিসহ ২৬ জন পলাতক
উপজেলা সংবাদদাতা, বীরগঞ্জ, দিনাজপুরঃ
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ২০১৪ সালে দুই কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় রোববার রাতে থানায় মামলা হয়েছে। এতে সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৯০-১০০ জনকে।
বীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ভোগীরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৪৫)। এই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।
এজাহার নামীয় আসামিদের অন্যতম হলেন দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, পৌর শহরের ইয়াসিন আলী, শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি, গোলাপগঞ্জ শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোজাম্মেল হক রিমন, নিজপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকার, সাতোর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম শেখ, বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান জিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম নুর ও শতগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা।এজাহারে বাদী জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০ দলীয় জোট বর্জন করে। ৪ জানুয়ারি বিকেলে আমার ছেলে সালাউদ্দিন (১৬) গণপৈত গ্রামে তার খালু মোঃ দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। ৫ জানুয়ারি সালাউদ্দিন বাড়িতে ফেরার সময় তার বন্ধু সাহাডুবি (উত্তরপাড়া) গ্রামের আসাদুল ইসলামের (১৫) সঙ্গে দেখা করে। এরপর ওই দিনেই দুই বন্ধু পায়ে হেঁটে বাড়ির দিকে আসার পথে শিবরামপুর ইউনিয়নের বাবুরহাট ভেলাপুকুর এলাকায় পৌঁছালে এজাহার নামীয় আসামিরাসহ ৯০-১০০ জনের একটি দল তাদের পথরোধ করে শিবির শিবির বলে চিৎকার করে সালাউদ্দিন ও আসাদুলকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে সড়কে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সালাউদ্দিন ও আসাদুলকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় বীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে সালাউদ্দিন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় এবং পরের দিন আসাদুল ইসলাম মারা যায়।
বাদী জহুরা খাতুন জানান, তাঁর ছেলে সালাউদ্দিন কাঠগড় দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিল। পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে থাকায় তিনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগর গ্রামের জাহের আলীকে (৩৫) রোববার নিজবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি মজিবুর রহমান জানান, বাদীর এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও গুরুতর জখমের ঘটনায় বীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।