বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দখল করে কাঁচাবাজার, যানজটে ভোগান্তি | Daily Chandni Bazar বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দখল করে কাঁচাবাজার, যানজটে ভোগান্তি | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:৪৭
বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দখল করে কাঁচাবাজার, যানজটে ভোগান্তি
শুভ কুন্ডু, শেরপুর, বগুড়াঃ

বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দখল করে কাঁচাবাজার, যানজটে ভোগান্তি

বগুড়ার শেরপুরে লক্ষাধিক জনসাধারণের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পৌর শহরের রেজিস্ট্রি অফিস রোড। দীর্ঘদিন যাবৎ সংকুচিত এই সড়ক পরিনত হয়েছে বৃহৎ এক কাঁচাবাজারে। রাস্তার দুই ধারে সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় তিনশতাধিক দোকান বসে এখানে। সড়কটি সকল শ্রেণী ও বয়সের লোকজনের জন্য চলাফেরার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও নারীরা বিভ্রান্তিতে পরছে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে। দুর্ভোগ কমাতে বাজারটি স্থানান্তর করে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, এখানে রাস্তা সংকুচিত করে নির্মিত দোকান ঘর ভাড়া দিয়েছে পৌরসভা। আবার সেই ভাড়াটিয়া তার সামনের রাস্তা ভাড়া দিয়েছেন অন্য আরেকজন ব্যবসায়ীকে। এখানে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দোকানের আকার ও স্থান ভেদে জায়গার ভাড়া দিতে হয় দৈনিক ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এর সবটাই নেয় তার পিছনের দোকানী বা বাড়ির মালিক। পৌরসভা থেকে কোন খাজনাও আদায় করা হয় না বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। রাস্তাগুলো প্রায় বন্ধ করে প্রায় দুই দশক ধরে এভাবেই চলছে রেজিস্ট্রি অফিস বাজার।
স্থানীয় ফজলুর রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে পৌরসভার ড্রেনের উপর ৪৪টি দোকান ঘর তৈরি করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় লোকজন সেগুলো মাসিক ৩০০ টাকায় ভাড়া নিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই আবার অন্য জনের কাছে মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। তারা তাদের সামনের রাস্তা সবজি ও মাছ বিক্রেতাদেরকে দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। এর ফলে রাস্তায় চলাচল করা যায় না।
মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল বাছেদ বলেন, ৭০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ২৫ বর্গফুটের একটি ঘর ভাড়া নিয়েছি। প্রতিদিন ৪০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু জায়গার সংকুলান না হওয়ায় রাস্তার পাশে মাছ বিক্রি করছি। এর জন্য প্রতিদিন মানুষের গালিগালাজ শুনতে হয়।
স্থানীয় শিক্ষক হিমাংশু সরকার বলেন, এই বাজারের মাত্র ১০০ গজ দূরেই শেরপুর বারোদুয়ারী হাট সপ্তাহে দুই দিন বসে। বাজারটি সেখানে স্থানান্তর করলে পৌরসভা রাজস্ব পেত এবং জনগণের ভোগান্তিও কমত।
মাংস ব্যবসায়ি বাবলু শেখ বলেন, রাস্তায় বাজার সবার কারণে ক্রেতারাও ভোগান্তি শিকার হন। তাই সরকার যদি বাজারটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেয় সবাই উপকৃত হবে।
মাছ ব্যবসায়ী মো: আনিস জানান, এই এলাকা দিয়ে সবারই চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থী ও মহিলাদের জন্য চরম কষ্টভোগ করতে হয়। তিনি বলেন, বাজারটি স্থানান্তরিত করলে সকলের ভোগান্তির অবসান হবে।
কাফুরা এলাকার দশম শ্রেণীর শোভানা ইসলাম স্বর্ণা সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে বিরম্বনায় পরতে হয় প্রতিদিনই। নিরুপায় হয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করায় স্কুলে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক আশিক খান চাঁদনী বাজারকে জানান, ২০০৫ সাল থেকে পৌরসভার দোকানঘর গুলোর সামনের রাস্তায় রেজিস্ট্রি অফিস বাজারটি বসে পাশাপাশি ড্রেনের উপর কিছু মানুষের ঘর তৈরী করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে অভিযোগ করেছেন। এখানে রাস্তার মধ্যে যে দোকানগুলো বসে তাদের কোন বৈধতা নেই। অবৈধভাবে ড্রেনের উপরে নির্মাণ করা ঘরগুলো উচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় আনাহবে এবং শেরপুর পৌর কিচেন মার্কেটের ঘরের বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেখানে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পথচারী সহ সকলেই উপকৃত হবেন।