উত্তরাঞ্চল থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের দাবিতে পীরগঞ্জ উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন শহীদ আবু সাঈদের পরিবার ও ছাত্র-জনতা। 

আন্দোলনকারীরা দাবি জানান, উত্তরবঙ্গ তথা পীরগঞ্জ থেকে অন্তত দুইজন উপদেষ্টা নিয়োগ করা হোক। তাঁরা বলেন, দাবি আদায় না হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরের ১৬ জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য রেলপথ ও সড়ক অবরোধসহ রংপুর বিভাগ অচল করার মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এসময় বক্তারা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের জন্মভূমি পীরগঞ্জ থেকে দুজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার দাবি তোলা হয়। এই দুই উপদেষ্টা হলেন পীরগঞ্জের কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং শহীদ আবু সাঈদের ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমিন। 

মানববন্ধনে আরও কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। এসব দাবি ছিল:  
- সুষম উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের দুই বিভাগ থেকে কমপক্ষে দুজন করে চারজন উপদেষ্টা নিয়োগ করা।  
- সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তাদের নিয়োগে আঞ্চলিক বৈষম্য বন্ধ করা।  
- প্রতিটি উপদেষ্টা তাঁদের কার্যক্রমের অগ্রগতি সাপ্তাহিকভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করবেন।  
- নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের পরামর্শ নেওয়া হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আবু সাঈদের বড় ভাই রুহুল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুম বিল্লাহ, কারমাইকেল কলেজের ছাত্র মেহেদী হাসান, রাকিব মিয়া, রংপুর সরকারি কলেজের ছাত্র রাজেদুল, নুর আলম, পারভেজ, মুজাহিদ, সিয়াম, নাহিদ প্রমুখ।

রুহুল আমিন বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের হলেও উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা থেকে একজনকেও নেওয়া হয়নি। এটি রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের প্রতি বৈষম্য। আমরা চাই, অতি দ্রুত রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল থেকে উপদেষ্টা নিয়োগ করা হোক।” তিনি আরও বলেন, “আমার ছোট ভাই আবু সাঈদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বৈষম্য হতে দেওয়া হবে না।” 

মঙ্গলবারের আন্দোলনের পটভূমিতে উল্লেখযোগ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর মৃত্যুতে আন্দোলন একটি বৃহৎ গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।

শেষে, বিশাল বিক্ষোভ মিছিলটি পীরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।