নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী হাতিরপুল এলাকাসহ শত বছরের ঐতিহ্য রক্তদহ বিলে গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র ও পাখি পল্লী। এলক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ইতিমধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকল প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে দৃশ্যমান কাজ শুরু করা হয়েছে। শতভাগ বাস্তবায়ন হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে এই এলাকা। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের।
জানা গেছে, রাণীনগর একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। কিন্তু এখন পর্যন্ত উপজেলায় পর্যটনমুখি কোন খাত গড়ে তোলা হয়নি। উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্য হচ্ছে রক্তদহ বিল। এই বিলটি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা দুই সিমানার মধ্যে অবস্থিত। তবে বিলের সিংহভাগই হচ্ছে রাণীনগর উপজেলার অংশে। আর রাণীনগর-আবাদপুকুর সড়কটির হাতিরপুল এলাকা পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থান। প্রতিদিন বিকেল হলেই হাতিরপুল এলাকায় শত শত মানুষের আগমন ঘটে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রক্তদহ বিলের এই অঞ্চলটি যখন পানিতে টই-টুম্বর হয়ে যায় তখন এলাকাটি আরও আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে। নৌকা নিয়ে ভ্রমণের জন্য হাজারো পর্যটকরা এখানে ভীড় করেন। আর হরেক রকমের পাখিদের কলকাকলীতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো রক্তদহ বিল এলাকা।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, হাতিরপুল ব্রিজ থেকে রতন ডারার পাশ দিয়ে রক্তদহ বিলের মধ্যে চলাচলকারী মেঠো রাস্তাটি আধুনিকায়ন, রাস্তার দুইপাশে পর্যটকদের জন্য বসার ব্রেঞ্চ নির্মাণসহ আরও নানা রকমের সৌখিন ও আকর্ষনীয় স্থাপনা নির্মাণ করা এবং সারা বছর রক্তদহ বিলে আশ্রয় নেওয়া হরেক রকমের পাখিদের অভয়ারন্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাখি পল্লী হিসাবে এলাকাটিকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাখিরা যেন নিরাপদে বসবাস ও প্রজনন করতে পারে সেই জন্য সড়ক ও বিলের পাশ দিয়ে থাকা গাছগুলোতে পাখির বাসা হিসাবে মাটির হাড়িও স্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যে “রক্তদহ বিল পর্যটন এলাকা ও পাখি পল্লী” শীর্ষক প্রকল্প স্থাপনের জন্য সকল প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাসহ উপজেলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে প্রথমবারের মতো উপজেলায় কোন এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা গেলে স্থানীয়দের পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষরা যান্ত্রিক এই জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু বিনোদন গ্রহণ করতে পারবেন। হরেক রকমের হাজার হাজার পাখির কিচিরমিচির শব্দে সকাল হবে এই অঞ্চলের মানুষদের। পরিবারের সকলকে নিয়ে গড়ে ওঠা পর্যটন কেন্দ্রে এসে পাখি দর্শনের পাশাপাশি কিছুটা সময় প্রকৃতির মাঝে কাটানোর সুযোগ পাবেন। পর্যটকের আগমনের ফলে এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক দৃশ্যপট।