প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:৩১
নাটোরে ধান বীজ কিনে প্রতারনার শিকার কৃষক শফিকুল- ১০ বিঘা জমির ফলন বিপর্যস্ত
নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ
"ব্রি ধান-৩৯ জাতের' ধান বীজ কিনে প্রতারনার শিকার হয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের কৃষক শফিকুল ইসলাম। মৌসুম শেষ হলেও তার ১০ বিঘা জমির ধান এখনো কাটার উপযোগী হয়নি। গাছের বেশিরভাগ ধানের শীষে চিটা দেখা দিয়েছে। ধানের ফলন না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। গুরুদাসপুরের মশিন্দা মাঝপাড়া বিলে কৃষক শফিকুলের ওই ধানের জমি। শফিকুল ইসলাম মশিন্দা গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে। এ বিষয়ে তিনি প্রতিকার চেয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই বীজ ভান্ডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারের 'রহমন বীজ ভান্ডার' থেকে 'ব্রি ধান-৩৯ জাতের ' ধানের বীজ কিনেছিলেন তিনি। পাশের জমিগুলোতে একই জাতের ধান কাটা শেষের পথে। কিন্তু তার ১০ বিঘার জমির ধান ১২০ দিন অতিবাহিত হলেও ধান পরিপক্ক হয়নি। কিছু গাছে ধান গজালেও তা চিটা দেখা যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে " ব্রি ধান -৩৯ বীজের কথা বলে মিশ্রজাতের বীজ দিয়ে প্রতারণা করেছেন।
এজন্য তিনি বীজ ভান্ডারের বিচার দাবি করেছেন।
কৃষক শফিকুল ইসলামের পিতা মোজাহার আলী বলেন, ১০ বিঘা জমির জন্য তিনি 'রহমান বীজ ভান্ডার ' থেকে 'ব্রি ধান-৩৯ জাতের ৫২ কলেজ বীজ কিনেছিলেন। এরমধ্যে বিএডিসির ১০ কেজির ২ বস্তা ও "রহমান বীজ ভান্ডারের " নিজস্ব মোড়কের ১৬ প্যাকেট বীজ ছিল। বীজ বপন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তার প্রতি বিঘায় অন্তত ১৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে তার ১০ বিঘা জমিতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি বলেন, ঠিকমত ফলন হলে তিনি ১০ বিঘায় ২০ মণ হারে অন্তত ২০০ মণ ধান পেতেন। অথচ একদিকে যেমন এক কেজি ধানও পান নি। তেমন অন্যদিকে সময়মতো ধান কাটতে না পেরে তার ১০ বিঘা জমিতে রবিশস্যও আবাদ করতে পারছেন না। সর্বোপরি তিনি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
রহমান বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান বলেন - কৃষক শফিকুলের কাছে তিনি বিএডিসির ' ব্রি ধান -৩৯ জাতের ৫২ কেজি ধান বীজ বিক্রি করেছিলেন। তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠানের নামে মোড়কীকরণ করে যে ধান বীজ বিক্রি করেছেন সেগুলো বিএডিসির। মূলত চলতি মৌসুমে বিএডিসির ' ব্রি ধান-৩৯ জাতের বীজে ভেজাল হওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে তার কোন হাত নেই।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ সালমা আক্তার বলেন - বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কৃষি অফিসকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন - ব্রি ধান-৩৯ জাতের ধান বীজ কিনে কৃষক শফিকুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মর্মে অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
নাটোর জেলা বীজ কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান - ' বিএডিসির ধান বীজ 'রহমান বীজ ভান্ডার' এর নিজস্ব মোড়কে বিক্রির সুযোগ নেই। বীজ কিনে কৃষক প্রতারিত হয়েছেন এমন অভিযোগও তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।