রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে হাতুড়ি পেটার অভিযোগ | Daily Chandni Bazar রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে হাতুড়ি পেটার অভিযোগ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:৪৩
রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে হাতুড়ি পেটার অভিযোগ
রাজশাহী সংবাদদাতাঃ

রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে হাতুড়ি পেটার অভিযোগ

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে হাতুড়ি ও বাঁশ দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই দফা হামলার শিকার হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত এই ছাত্র সমন্বয়কের নাম সোহেল রানা। তিনি রাজশাহী কলেজের ছাত্র। সোহেল রানা রাজশাহী কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পর্যায়ের সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি নিজেকে ‘রাজশাহীর সমন্বয়ক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তবে এ কলেজে কোন সমন্বয়ক পরিষদ ছিলনা।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহী কলেজ-নির্ভর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সোহেল রানা যে গ্রুপে রয়েছেন, সেই গ্রুপটি বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় এক সমন্বয়ককে রাজশাহীতে এনে স্থানীয় কমিটি করার চেষ্টা করেছিলেন। রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলসহ অন্য গ্রুপটি এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর সমন্বয়ক আব্দুর রহিম বলেন, ‘আজ একটা গ্রুপ কেন্দ্রের একজন সমন্বয়ককে এনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর কমিটি করার চেষ্টা করেছিলেন। ওই কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের বাড়ি রাজশাহীতে। তিনি ঢাকার একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সমন্বয়ককে গণপিটুনি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। পরে সোহেলের ওপর কারা হামলা করল সেটা জানি না।’

তবে যারা প্রথমে বিশৃঙ্খলা করেছে, তারা ‘বহিরাগত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আহত সোহেল রানা। তিনি বলেন, প্রথমে বহিরাগতরাই বিশৃঙ্খলা করে। পরে ছাত্রদল হামলা করে তার ওপরে।


হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহেল রানা জানান, বিকেলে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহীর পক্ষ থেকে বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। পরে সেটি কালেক্টরেট মাঠে নেওয়া হয়। ওই মাঠে গিয়ে তিনি আঁচ করেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী তাকে ‘টার্গেট’ করছেন।

তিনি আরও জানান, হামলার আশঙ্কায় তাই তিনি ওই মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাকে কয়েকজন মিলে মারধর করেন। এরপর তিনি একটি রিকশা নিয়ে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। আরেক দফা হামলার আশঙ্কায় তিনি বিকল্প পথেই হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। তখন রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের পাশে আবারও রিকশা থেকে নামিয়ে ২০-২৫ জন ছাত্রদল নেতাকর্মী তাকে পিটুনি দেন। হাতুড়ি ও বাঁশ দিয়ে তাকে ইচ্ছেমতো পেটানোর পর হামলাকারীরা চলে যান।

সোহেল রানা অভিযোগ করেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের জয়, রুহুল আমিনসহ ২০-২৫ জন তাকে পিটিয়েছেন।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির দাবি করেন, এটি মূলত সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধের ফল। তিনি বলেন, ‘সোহেলের ওপর হামলাকারী হিসেবে ছাত্রদল বলা হলেও আন্দোলনের সময় তো ছাত্রদলও ছিল। ছাত্রদল এখন পরে, আগে ওরা সমন্বয়ক।

ওয়ালিদ আবির আরও বলেন, ‘এই ছেলেটা (সোহেল) আগে জাসদ ছাত্রলীগ করত। পরে সমন্বয়ক হয়ে গেছে। সে সুবিধাবাদী। এ জন্য তার ওপর আক্রমণ হয়েছে বলে শুনেছি। বিস্তারিত আরও খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’

রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানিয়েছেন, সোহেল রানার শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি পর্যবেক্ষনে রয়েছেন।

রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে। একজন আহত বলে শুনেছি। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবো।’