রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওমর কিসকু (৩১) নামের এক বন্দী আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে এক কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শিমলাদিঘীপাড়ার ওমর কিসকু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) (সং/০৩) ধারায় ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩৯৪ ধারায় ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন ২০১২ সালের ১৬ মে। এই মামলায় ২০১১ সালের ১৫ জুলাই গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি রাজশাহী কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট তিনি কারাগারের পেরিমিটার ওয়াল টপকে জেল থেকে পালিয়ে যান। তবে, ওইদিনই তিনি ধরা পড়েন। এরপর থেকেই ওমর কিসকু রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সেলে বন্দী ছিলেন।
গত ২৬ নভেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে ওমর কিসকু সেলের দরজার ওপরের অংশের লোহার পাতের সঙ্গে পাজামার ফিতা লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যার খবর জানার পরই তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্তের জন্য এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির প্রধান হিসেবে তিনি নিজেই রয়েছেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের জেল সুপার এ এস এম কামরুল হুদাকে সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারের জেলার জাকির হোসেনকে এই কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, ইতোমধ্যে এই কমিটি কাজ শুরু করেছে। কারাগারের ভেতরের সিসি ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে কারাগারের কারও দায়িত্বে অবহেলার প্রমান পাওয়া গেলে তা কারা মহাপরির্শককে জানানো হবে। এরই মধ্যে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ঘটনার সময় সেলের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষী জোবায়ের আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকার ইনচার্জ সহকারী প্রধান কারারক্ষী আব্দুল জলিল ও সেলের কর্তব্যরত কারারক্ষী জোবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।