গত ৩০ অক্টোবর নওগাঁর আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করেন কামাল হোসেন । যোগদানের পরে সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, রজিনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশিল সমাজের প্রতিনিধির সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়কালে মাদক, বাল্যবিয়ে, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন আত্রাই গড়ার অভিমত ব্যক্ত করেন। একাজে সকলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় সর্বশ্রেণি পেশার মানুষ নিয়ে টিম আত্রাই গঠন করেন তিনি। টিম প্রধান হিসাবে ইউএনও প্রথমে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন পরিস্কার করে পরিষদের মূল ফটোকসহ একাধিক স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করেন। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়করে “কোথাও কোন ময়লা নেই, এমন একটা আঙিনা চাই” ও “আজকের শিশুর” থিম উল্লেখ পূর্বক শিক্ষার্থীরা যেনো নিজ সম্পর্কে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলতে পারে তার কৌশল বুঝিয়ে দিয়ে সহায়তার আহবান জানান।যোগদানের পর থেকে প্রতিনিয়ত দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও বাজারগুলো পরিচ্ছন্ন রাখতে মানুষের সাথে মতবিনিময় করায় মানুষের মাঝে পরিচ্ছন্ন আত্রাই গড়নে একধরনের আলোরন সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, “কোথাও কোন ময়লা নাই এমন একটা আঙিনা চাই” লিখা ব্যানার দেয়ালে সাটানো রয়েছে। বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ডাস্টবিনে শিক্ষার্থীরা ময়লা ফেলছে। ফলে বিদ্যালয় ও এর চারপাশ ময়লা আবর্জনা মুক্ত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন দেখাচ্ছে।
প্রাত্যহিক সমাবেশের সময় আত্রাই উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই দিনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি ৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ভালো করে উপস্থাপন করায় নবম শ্রেণির ছাত্রী চৈতি খাতুনকে “সেদিনের শিশু” নির্বাচিত করে তাঁকে মেডেল পরিয়ে দিতে দেখা যায়।
ভরতেঁতুলিয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুল উদ্দিন বলেন, ইউএনও কামাল হোসেন স্যারের অনুপ্রেরণায় বিদ্যালয়ের চারপাশ আবর্জনামুক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে জানায় তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে। এছাড়া তাদের পোষাক পরিধানে স্মার্ট হবার পাশাপাশি নিজ সম্পর্কে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে।
মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম দুলু বলেন, ইউএনও স্যার যোগদানের পর থেকে হাসিমুখে মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন। আইনের মধ্যে থেকে সমস্যার সমাধান করে দেওয়ায় স্যারের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল হোসেন বলেন, বুদ্ধিবৃত্তিক-জ্ঞানভিত্তিক কুসংস্কার বিবর্জিত আদর্শিক উপজেলা গড়নে জনগণের ভাল মন্দ ও সাবলীল চিন্তা অপরিহার্য। উন্নত মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো ভালো ব্যক্তিত্বের মানুষ গঠন। ভালো ব্যক্তিত্বের মানুষ গড়নে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অপরিহার্য। সকলকে ভালো কাজের অনুশীলনে অভ্যস্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ‘কোথাও কোন ময়লা নেই, এমন একটি আঙিনা চায়’। এই আঙ্গিনা সরকারি দপ্তর প্রধানদের স্ব স্ব দপ্তর, ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান, বাড়ির কর্তাদের তাদের বাড়ির আঙিনা নিজ উদ্যোগে অন্যান্য সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পরিস্কার নিশ্চিতকরণ। ভালো কাজের নাগরিক অনুশীলন, ভালো সমাজ গঠনে অন্যতম সহায়ক।