কলাপাড়ায় গণকের গণনায় পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর | Daily Chandni Bazar কলাপাড়ায় গণকের গণনায় পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:২৪
কলাপাড়ায় গণকের গণনায় পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর
এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া,পটুয়াখালীঃ

কলাপাড়ায় গণকের গণনায় পরকীয়া সন্দেহে ৪ জনকে মারধর

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গণকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চারজনকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতরা হলেন: মিজানুর, তার মেয়ে কলেজ পড়ুয়া লামিয়া, স্ত্রী সাবিনা এবং স্ত্রীর বোনের কন্যা কলেজ শিক্ষার্থী মারুফা। তাদের মধ্যে মারধরের ফলে সাবিনা বেগমের বাম পা ভেঙে গেছে।

হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে থাকা মিজানুর ঘরামী জানান, ২৭ নভেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক খাইয়ে দুর্বৃত্তরা তাদের ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ অর্থ লুটে নেয়। পরবর্তী সময়ে তিনি তার শ্বশুর, শাশুড়ি, ছেলে এবং স্ত্রীর বোনের কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়দের সহায়তায়। কিন্তু দুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলে শালিস বৈঠকের নামে তাদের গোটা পরিবারে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। মিজানুর আরও বলেন, স্থানীয় এক গণকের উদ্ধৃতি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তোলা হয় এবং এর ফলে তাদের উপর এমন নির্যাতন করা হয়।

মিজানুরের স্ত্রী সাবিনা জানান, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে জানতে পারেন যে, অঞ্জনা রানী নামে এক নারী গণনা করে স্থানীয়দের জানায় যে, তার স্বামীর সঙ্গে বোনের মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এর ফলে চেতনা নাশক খাইয়ে এক বিছানায় থাকার ঘটনায় চুরির নাটক সাজানো হয়েছে। সাবিনা বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার দিন আমার শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ছেলে বাড়িতে ছিলেন এবং তারা সবাই মেডিসিনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু এখন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আমার কলেজ পড়ুয়া বোনের মেয়ে এখন শারীরিক এবং মানসিকভাবে অত্যাচারিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

তিনি আরও জানান, ১ ডিসেম্বর রোববার বিকালে হাবীব ঘরামী নীলগঞ্জে তাদের বাড়িতে এসে শালিসে বসলে গণকের উদ্ধৃতি দিয়ে পরকিয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাবিনা প্রতিবাদ করলে, জাকির, মামুনসহ বেশ কয়েকজন হাবীব ঘরামীর উপস্থিতিতে তাদের সবাইকে মারধর করে। তিনি বলেন, “এখন চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে পরকিয়ার বিষয়টি সমাজে প্রচারিত করা হচ্ছে।”

এ বিষয়ে গণিকা অঞ্জনা রানীর কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, “তিনি অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখেছেন যে, কলেজ পড়ুয়া মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে, তবে কারো নাম তিনি বলেননি।” কিন্তু কোন প্রমাণ ছাড়া পরকিয়ার বিষয়টি লোক সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তার কাছে কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি।

শালিশদার হাবীব ঘরামী বলেন, “এটি একটি পারিবারিক বিষয় ছিল এবং আমি কাউকে মারধর করিনি।”

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল আহমেদ জানান, “এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”