তাড়াশে এক দশকে কৃষি জমি কমেছে দুই হাজার হেক্টর | Daily Chandni Bazar তাড়াশে এক দশকে কৃষি জমি কমেছে দুই হাজার হেক্টর | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:৩১
তাড়াশে এক দশকে কৃষি জমি কমেছে দুই হাজার হেক্টর
তাড়াশ সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা:

তাড়াশে এক দশকে কৃষি জমি কমেছে দুই হাজার হেক্টর

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ  ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা লঙ্ঘন করে উর্বর কৃষি জমিতে অবাধে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে যানা গেছে, উপজেলায়  প্রায় দুই হাজার হেক্টর  কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে দিন দিন খাদ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকহারে। যত্রতত্র অবৈধ পুকুর খননের ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে  বিস্তীর্ণ ফসলের  মাঠে আবাদযোগ্য বহু জমি জলবদ্ধতার কবলে পড়ে আছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের পৌষার-মাধাইনগর সড়কের পাশে বিশ বিঘা তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। নওগাঁ ইউনিয়নের ভায়াট গ্রামে প্রায় পঁঞ্চাশ বিঘা আয়তনের একটি পুকুর খনন করা হচ্ছে সোনাপাতিল সড়কের পাশে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তাড়াশ পৌর শহরের শ্মশান ঘাট এলাকাতেও একাধিক পুকুর খনন করা হচ্ছে। কাউরাইল গ্রামেও বড়-বড় পাকুর খনন হচ্ছে। এদিকে  যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে উপজেলার  মাধাইনগর ইউনিয়নের সরাপপুর ও ঝুরঝুরি গ্রাম। তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠের কৃষি জমিতে পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এবং  জমিগুলো  ঘাসে ভরে গেছে। ভায়াট গ্রামের আকছেদ আলী নামে একজন কৃষক বলেন, ভায়াট গ্রামের পঁঞ্চাশ বিঘা আয়তনের পুকুরটি খনন করা হলে আশপাশের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। ভুক্তভোগী ঝুরঝুরি গ্রামের কৃষক কালু প্রামানিক, জেলহক আলী ও লিটন সরকারসহ অনেকে বলেন, প্রভাব খাটিয়ে লোকজন অবৈধভাবে পুকুর খনন করেছেন। তারা মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু আমাদের মতো হাজারো কৃষকের ক্ষতি হয়ে গেছে। সরাপপুর গ্রাম, ঝুরঝুরি গ্রাম ও তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠের জমি কয়েক বছর ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। কোনো আবাদ হয়না।অপরদিকে তাড়াশের সচেতন মহল জানিয়েছেন, অবৈধ পুকুর খনন কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারছেন না প্রশাসন। সাময়িক ব্যবস্থা নিলেও শেষ পর্যন্ত একটি পুকুরও আটকে থাকেনা। গনহারে পুকুর খনন বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ বলেন, তাড়াশে এক দশকে চার হাজার দুইশর বেশী পুকুর খনন করা হয়েছে । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,উপজেলায় দিন দিন পুকুর বাড়ছে। গত একদশকে কৃষি জমি কমেছে প্রায় দুই  হাজার হেক্টর । এখনও প্রায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধ। ধান উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।
তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, পুকুর খনন বন্ধে ইউএনও, এসিল্যান্ডের কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক খালিদ হাসান বলেন, পুকুর খনন চক্র সাধারণত রাতে খনন কাজ করে থাকেন। পুকুর খনন আমলি অপরাধের মধ্যে পড়ে। থানা পুলিশ এসব বন্ধ করতে পারেন। প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুইচিং মং মারমা বলেন, কোন এলাকাতে পুকুর খনন করা হচ্ছে তথ্য দিন। ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।