বগুড়া-৫ ও ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব গোলাম মোঃ সিরাজ বলেছেন, ভারতের কাছে গণতন্ত্র শেখার কিছু নাই। বাংলাদেশ কখনো কারো কাছে মাথা নত করে নাই। আর মাথা নত করবেও না। এদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান যারা আছে সকলে আমাদের ভাই। এদের কেন্দ্র করে বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটে নাই, ঘটনা যা ঘটেছে সীমানার ওপারেই ঘটেছে। আমরা আশা করি, ভারত সকল ষড়যন্ত্র ত্যাগ করে আমাদের বন্ধু হিসেবেই থাকবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়েছি। মন খুলে কথা বলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের আকাশে আবারও কালো মেঘ উঁকি দিচ্ছে। অনেক জায়গায় লুটপাট, মাজার ভাঙা ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে একটি মহল সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। মঙ্গলবার বিকালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের স্যানালবাড়ী মাঠে আয়োজিত শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক এমপি সিরাজ আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছর দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।‘ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে তাদের সকল চক্রান্ত মাটির সাথে মিশে দিয়েছে। যা পতিত স্বৈরাচারের কল্পনারও বাইরে ছিল। সবকিছুই হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালার পরিকল্পনা অনুযায়ী। তারা মানুষের রক্ত নিয়ে খেলেছে। তারা ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্যে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমেই আমরা দেশে মুক্ত পরিবেশ পেয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা শান্তিপ্রিয়। তারা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। আমাদের কোনো প্রভু নেই। আমাদের বন্ধু আছে। আমরা আগ্রাসীতে বিশ্বাসী নই। গোলাম মোঃ সিরাজ বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সৃষ্টিই হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য। যেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র স্বাধীনতার সময় আমাদের সাহায্য করেছিল সেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র এখন প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা এদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। ছাত্র-জনতা আগস্টে নিজের রক্ত ঢেলে দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত করেছে। তাই এখন দেশে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা দেখা দিয়েছে। গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার এই নতুন স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি শহিদুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে এম মাহবুবার রহমান হারেজ, উপজেলা জামায়াতের আমীর আলহাজ্ব দবিবুর রহমান, সেক্রেটারি নাজমুল হক, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিমাই ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম কুন্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক বাধন কর্মকার কৃষ্ণ, সহ-সভাপতি করুনা রানী ঘোষ, বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ শেরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌমেন্দ্র নাথ ঠাকুর শ্যাম, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ শেরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি বরেন্দ্র চন্দ্র সান্যাল, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা, শুভ অধিকারী, জগন্নাথ মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি প্রকাশ সরকার, আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা শ্রীকান্ত মাহাতো, হিন্দু মহাজোট শেরপুর উপজেলার সদস্য নিখিল সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।