প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:০৫
নাটোরে সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা
নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ
" বিদায়ের সময়টা বেদনার হলেও, কোন কোন বিদায় চিরস্মরণীয় হয়ে স্মৃতিপটে এঁকে থাকে"। এমনই এক বিদায়ী সংবর্ধনা পেয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোকলেছুর রহমান। এই শিক্ষকের অবসরগ্রহণ কে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ এক অনাড়ম্বর ব্যাতিক্রম আয়োজন করে।
৩০ বছর আগে বাড়ি থেকে হেঁটে স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছিলেন খন্দকার মোকলেছুর রহমান। আর গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে ওই স্কুল থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে বিদায় সংবর্ধনা শেষে শিক্ষা জীবনের অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোকলেছুর রহমানের জাঁকজমকপূর্ণ বিদায়ী সংবর্ধনা।
প্রধান শিক্ষকের বিদায়ী ক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে তমালতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ সকাল থেকেই আয়োজন করেন স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানের।
বর্ণিল সাজে আয়োজিত বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাগাতিপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুরাইয়া মমতাজ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফাইমা খাতুন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও চকগোয়াস বেগুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদুর রহমান, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হায়দার রশিদ সোনা প্রমুখ।
ওই স্কুলের শিক্ষক রাজিব হাসান বলেন, এটাই এই বিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠান। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। তাই বিদ্যালয়ের সকলের প্রত্যাশা ছিল একটা জমকালো অন্যরকম বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করা। এ জন্যই ঘোড়ার গাড়িতে করে ব্যাতিক্রম আয়োজনের মাধ্যমে তাঁকে বিদায় জানানো। তিনি একাধারে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করেছেন। তিনি অন্য শিক্ষকদের কাছে আদর্শ ছিলেন।
শিক্ষার্থী মাঈশা আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষক শুধু বইয়ের শিক্ষার আলোয় ছড়ান নি, তিনি অভিভাবক হিসাবে তাঁদের ভালোবাসায় সিক্ত করেছেন।
প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোকলেছুর রহমান উপজেলার তমালতলা হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
বিদায়ী শিক্ষক খন্দকার মোকলেছুর রহমান বলেন, " বিদায় বড় কস্টের হলেও " আজ অনেক ভালো লাগছে। মাত্র তিনজন ছাত্রী নিয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করে, বিদায়কালে এখন প্রতিষ্ঠানে ৪ শতাধিক ছাত্রী রেখে গেলাম। এই বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহন করে অনেকেই বড় বড় প্রতিষ্ঠানে আজ কর্মরত হয়েছেন। পরিশেষে তিনি অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বাকী জীবনের কল্যাণ কামনায় সবার কাছে দোয়ার প্রার্থনা করে যান।