সিরাজগঞ্জে সেতুর কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার | Daily Chandni Bazar সিরাজগঞ্জে সেতুর কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২৩:১৬
সিরাজগঞ্জে সেতুর কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার
তাড়াশ সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা:

সিরাজগঞ্জে সেতুর কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার

সিরাজগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কাটাখালী নদে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নদীর দুই পারের প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষ। ২০২১-২২ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে ৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হলেও তা আজও সম্পন্ন হয়নি।

কাজের ধীরগতি ও ঠিকাদারের লাপাত্তা
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট মইনউদ্দিন (বাশি) লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু করে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। শুরুতে কাজের জন্য দুই কোটি ৬৮ লাখ টাকা বিলও দেওয়া হয়। তবে ছয় মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে উধাও হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর কিছু পিলারের কাজ হলেও পাটাতন নির্মাণ হয়নি। লোহার রডগুলো খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে, যেখানে মরিচা পড়তে শুরু করেছে। স্থানীয়রা পরিত্যক্ত রেলসেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদ পারাপার করছেন।

দুর্ভোগে গ্রামবাসী
স্থানীয় বাসিন্দা আলী আশরাফ বলেন, “সেতুর কাজের ধীরগতির কারণে জানপুর, রানীগ্রাম, খোকশাবাড়ি, পাঁচঠাকুরীসহ ২৫ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে আছেন। নারীরা, বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা, দ্রুত চিকিৎসা পেতে অসুবিধায় পড়ছেন। এছাড়া উৎপাদিত ফসল বাজারে তুলতে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, যা সময় ও খরচ বাড়াচ্ছে।”

আরেক বাসিন্দা নুরুন্নবী বলেন, “ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই পালিয়েছে। সেতুটি না থাকায় যাতায়াতে কষ্ট ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, দ্রুত কাজ শেষ করে আমাদের এই ভোগান্তি দূর করা হোক।”

চুরি ও অবহেলার অভিযোগ
দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় সেতুর নির্মাণসামগ্রী চুরি হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। নদীর দুই পাড়ের মানুষের শহরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সেতুটি। ফলে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ফসল পরিবহন ও নিত্যদিনের যাতায়াতে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

পাউবোর ব্যাখ্যা
পাউবো সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, “ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। তাদের ৪৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেতুটি দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।”

স্থানীয় জনগণ অপেক্ষায় রয়েছেন, কবে সেতুর কাজ শেষ হবে এবং তারা এই দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবেন।