সুচের ফোঁড়ে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন আখি খাতুন | Daily Chandni Bazar সুচের ফোঁড়ে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন আখি খাতুন | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:৫৬
সুচের ফোঁড়ে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন আখি খাতুন
তাড়াশ সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা:

সুচের ফোঁড়ে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন আখি খাতুন

সিরাজগঞ্জে এক সময় নারীরা  সংসারের সকল কাজকর্ম শেষ করে দল বেধে  নিজের মনের সবটুকু রং মিশিয়ে নঁকশিকাথা তৈরি করতেন। নঁকশিকাথার প্রতিটা ফোঁড়ে থাকতো নারীমনের স্বপ্ন, আশা ও ভালোবাসা। গত বুধবার রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বিজয় মেলায় দেখা মেলে কলেজ পড়ুশা শিক্ষার্থী আখি খাতুনের। সেখানে তিনি নকশি কাঁথার একটি স্টল নিয়েছেন। কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আখি খাতুন, জেলার রায়গঞ্জ  উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের হাসিল হোসেন এলাকার মৃত গোলাম রব্বানীর ছোট মেয়ে। ছেলেবেলায় অন্যসব শিশুর মতো তারও স্বপ্ন ছিল ভিন্নরকম কিছু করবেন। তার স্বপ্নটা ছিলো শখের নকশিকাঁথা নিয়ে। পাশাপাশি নকশি চাদর, কুশন কভার, শাড়ি, ওয়ান পিস-টু-পিস থ্রি-পিস, ওড়না, চাদরের কাজ। ভিন্নধর্মী এই স্টলটি সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী আখি খাতুন বলেন, হাতের কাজের কদর সবসময়ই থাকে এটা বলতেই হয়। কিন্তু আমার এই উদ্যোগ শুরু করার আগে আমি অনেকটা সময় নিয়ে বাজার বিশ্লেষণ করি। যার ফলে উদ্যোগের শুরু থেকেই খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। কেননা ভিন্নধর্মী কাজের সংমিশ্রণ ঘটানোর চেষ্টা ছিল আমার। যার ফলে আমার প্রধান ক্রেতা মূলত নারীরা। বিশেষ করে ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সি নারীরা । আমি এখন প্রস্তুত শখের কাজ গুলো সারাদেশের মানুষের হাতে পৌঁছে দিতে।তিনি আরও বলেন, সমাজে নারীরা স্বাবলম্বী হলে সবাই ভালো থাকবে। উন্নয়নশীল দেশ গড়তে আমাদের নারী উদ্যোক্তা দরকার। শুরুটা ছোট থেকেই হোক। স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার সার্থকতাটাই আলাদা। আমাদের আগের প্রজন্মের নারীরা এত সুযোগ-সুবিধা পায়নি। বর্তমানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধাও বেশি। নারীর মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো প্রয়োজন তার নিজের জন্য তো বটেই, সমাজ ও দেশের জন্য ভীষণ দরকার। রায়গঞ্জ উপজেলার তেলিজানা গ্রামের রেজাইল করিম ও দুলাল হোসেন  বলেন, আখি খাতুনের নকশিকাঁথা বিভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করা । কাঁথাগুলো অনেক ভালো। এজন্য তারা এখানকার নকশিকাঁথা দেখতে ও কিনতে এসেছেন।  তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, হাতের কাজের উদ্যোগের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে চাইলেও অতিরিক্ত উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি কর্মী একটি নির্দিষ্টসংখ্যক কাঁথার বেশি সেলাই করার সক্ষমতা রাখেন না। তবে প্রশিক্ষণ আর আর্থিক সহযোগিতা পেলে প্রসার ঘটবে এমন দাবি আত্মপ্রত্যয়ী নারীদের। প্রশিক্ষণ আর আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে গ্রামীণ নারীদের এই প্রচেষ্টাকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে এগিয়ে আসবেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাসরিন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নারীরা নকশিকাঁথা সেলাই করে নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি আরও বলেন , এই নারীগুলোকে যদি মহিলাবিষয়ক অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও দক্ষ করে তুলে যদি উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারি, তাহলে তাদের আয় আরও বাড়বে। এতে সংসারে আরও উন্নতি ঘটবে এবং তাদের সাফল্য আসবে।