সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম লাউ চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। দেশীয় লাউ চাষে সাফল্য পেয়ে ইতোমধ্যে তিনি এলাকার একজন আদর্শ লাউচাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তৌহিদুল সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউনিয়নের চৌধুরী ঘুঘাট গ্রামের আলহাজ্ব আলীর ছেলে।
লেখাপড়ার পাশাপাশি কৃষিকাজে মনোযোগ
ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার সাথে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতেন তৌহিদুল। বাড়ির পাশের পতিত জমিতে শখের বসে লাউ, কুমড়া, শিমসহ নানা রকম শাকসবজি চাষ করতেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আধুনিক মাচা পদ্ধতিতে চাষ করা লাউ গাছগুলোতে অসংখ্য ছোট-বড় লাউ ঝুলে আছে। সকাল-বিকেল নিয়মিত পানি সেচ, সার প্রয়োগ ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত তৌহিদ। বাজারে ভালো দামে লাউ বিক্রি হওয়ায় তার মুখে সাফল্যের হাসি ফুটে উঠেছে।
উৎপাদন ও লাভের সম্ভাবনা
তৌহিদুল জানান, এ বছর ৪০ শতাংশ জমি ৩ লাখ টাকায় লিজ নিয়ে আধুনিক মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ করছেন। তার লাউ চাষে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে ভালো ফলন হওয়ায় লক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রির আশা করছেন তিনি। বাজারে প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, "গত বছর এক বিঘা জমিতে লাউ চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। এ বছর জমির পরিমাণ ও চাষের আধুনিক পদ্ধতি বাড়িয়েছি। আগামীতে লাউ চাষ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।"
কৃষি কর্মকর্তার মন্তব্য
রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, একসময় রায়গঞ্জের কৃষকদের মধ্যে লাউ চাষের আগ্রহ কম ছিল। কিন্তু তৌহিদুলের মতো উদ্যোক্তাদের সাফল্য দেখে এখন অনেকেই লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, "লাউয়ে তেমন রোগবালাই হয় না। কিটনাশক স্প্রে না করেও ‘সেক্স ফেরোমন’ পদ্ধতি ব্যবহার করে বিষমুক্ত লাউ উৎপাদন করা সম্ভব। কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।"
উৎসাহের কেন্দ্রবিন্দু তৌহিদুল
তৌহিদুলের সাফল্য এখন পুরো এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন তার লাউ ক্ষেত দেখতে এবং পরামর্শ নিতে আসছেন। তার এই উদ্যোগ শুধু তার নিজের নয়, আশপাশের অন্যান্য কৃষকদেরও লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করছে।
স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক ফসল উৎপাদনের দৃষ্টান্ত হিসেবে তৌহিদুল আজ রায়গঞ্জের তরুণদের জন্য এক প্রেরণা হয়ে উঠেছেন।