
বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মৃৎশিল্পীদের মধ্যে বইছে ব্যস্ততা। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের বিখ্যাত পালপাড়া এলাকায় দিনরাত মাটির খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে।
গ্রামীণ মেলাগুলোতে এই পণ্যের চাহিদা বাড়ায় মৃৎশিল্পীরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। রোদে শুকানো, আগুনে পোড়ানো এবং রঙ ও কারুকাজের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে—পুতুল, ঘোড়া, ময়ূর, হাঁড়ি, বাটি, দইয়ের বাটি, গয়না ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী পণ্য।
চৈতন্য পাল, পালপাড়ার একজন অভিজ্ঞ মৃৎশিল্পী বলেন, “পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বেচাকেনা ভালো হলে বছরের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যায়।” তার স্ত্রী দীপালী রানী পাল জানান, “সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, তাই স্বামী ভ্যান চালিয়েও বাড়তি আয় করেন।”
স্থানীয় আরও অনেক মৃৎশিল্পী যেমন সন্ধ্যা রানী, স্বপনা রানী, প্রফুল্ল পাল, বিকাশ পাল ও তাপস পাল মেলাসহ আশেপাশের বাজারে পণ্য বিক্রি করেন।
তবে দুঃখজনকভাবে, প্লাস্টিক ও আধুনিক বিকল্পের ভিড়ে মাটির জিনিসের কদর আগের মতো নেই। অনেকেই মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণ পেলে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
সাতোর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন রাজা বলেন, “যারা সহায়তা চায়, তাদের যতটা পারা যায়, সহযোগিতা করা হয়। প্রয়োজনে আরো করবো।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদ জানান, “এ উপজেলায় শতাধিক মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। তারা যদি লিখিত আবেদন করে, আমরা তাদের সরকারি সহায়তার আওতায় আনতে পারি।”
???? বাংলা নববর্ষ যেমন বাঙালির সংস্কৃতির অংশ, তেমনি মৃৎশিল্পীরা এই সংস্কৃতিকে আজও জীবিত রাখছেন তাদের নিপুণ হাতে তৈরি শিল্পকর্ম দিয়ে।