নন্দীগ্রামে বোরো ধানের শীষে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন | Daily Chandni Bazar নন্দীগ্রামে বোরো ধানের শীষে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ০০:৪৮
নন্দীগ্রামে বোরো ধানের শীষে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন
ফজলুর রহমান, নন্দীগ্রাম, বগুড়া

নন্দীগ্রামে বোরো ধানের শীষে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

বসন্তের বাতাসে ইরি-বোরো ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকের মনকে উদ্বেলিত করছে। বৈশাখের ঝিলমিল বাতাসে ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ ঢেউয়ের মতো দুলছে। এদিকে ধানের শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই দানা পরিপক্ব হয়ে উঠবে, আর তখনই কৃষকরা সোনালী ফসল ঘরে তুলতে শুরু করবে।

প্রকৃতির এই দুলুনি কৃষকের সোনালী স্বপ্নে রূপ নিচ্ছে। কাঁচা শীষ দেখে বাম্পার ফলনের আশায় বুক ভরে উঠছে উপজেলার কৃষকদের। দিগন্তজুড়ে বিস্তৃত সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বর্ধিত করেছে। অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যা, এবং জমিতে যথাসময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলস্বরূপ ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক এবং উপজেলা কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৯ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের উন্নত জাতের বোরো ধান চাষে সহায়তা দিতে কৃষি বিভাগ প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করছে, যার ফলে তারা বেশি ফলন পাচ্ছে। কৃষি বিভাগ তাদেরকে সার্বক্ষণিক সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে।

অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ধানের শীষ হলুদ রঙ ধারণ করবে, এবং পরে সোনালী শীষে মাঠগুলো ঝলমল করবে। মাঠে পরিপূর্ণ ধান দেখে কৃষকদের মুখে আনন্দের ছোঁয়া ফুটবে। সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকদের গোলা। ইরি-বোরো মৌসুমকে ঘিরে এ উপজেলায় চাষিরা তাদের সোনালী স্বপ্নে বিভোর।

এছাড়া, চলতি বছর বিদ্যুৎ সরবরাহও ভালো ছিল, সার, বীজ ও বালাইনাশক সরবরাহে কোনো সংকট ছিল না, ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। সুতরাং, এবছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হবে, এমনটাই আশা করছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা।

বীরপলি গ্রামের কৃষক গোলাপ হোসেন বলেন, “এ বছর আমাদের উপজেলায় মিনিকেট, কাটারিভোগসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে নন্দীগ্রামের পুরো মাঠে সোনালী স্বপ্ন দুলছে। আশা করছি, এবার বোরো চাষে ভালো ফলন হবে, যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে।”

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কৃষি অফিসের সহায়তায় এবার চাষাবাদ করা ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ধান কাটা শুরু হবে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না ঘটলে, তারা গত বছরের তুলনায় এবছর অনেক ভালো ফলন পাবে।

নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মো. গাজীউল হক জানান, “ইরি-বোরো ধান চাষে শুরু থেকেই কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে ছিলেন। তারা কৃষকদের পাশে থেকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করেছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকার কারণে, বোরো ধানের রোগবালাই কম হবে এবং ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “এবার ১৯ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে, আশা করছি এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।”