
দীর্ঘ পাঁচ মাসের খরার পর বগুড়ায় নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টিতে খরাকবলিত প্রকৃতি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শহর থেকে গ্রাম—সবখানে গাছপালার সবুজ রঙ আবারও ঝলমল করতে শুরু করেছে, ধুলায় ঢেকে থাকা পরিবেশে ফিরেছে সতেজতা।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, এর আগে সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছিল গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, যার পরিমাণ ছিল মাত্র ১১ মিলিমিটার। প্রায় চার মাস পরের এ বৃষ্টিপাত স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে আনন্দ ও স্বস্তির সঞ্চার করেছে।
কৃষিখাতে বৃষ্টির ইতিবাচক প্রভাব
গত কয়েক মাস পানির অভাবে অনেক জমিতে চাষ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আবার কোথাও সেচপাম্পে নির্ভর করে আবাদ চালানো হচ্ছিল। এই বৃষ্টির ফলে জমিতে ফিরে এসেছে আর্দ্রতা, যা চাষের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে।
বিশেষ করে ধান, শাকসবজি এবং আমের মুকুলের ক্ষেতের জন্য এই বৃষ্টি অত্যন্ত উপকারী হয়েছে।
আমের মুকুলে পোকামাকড়ের আক্রমণ রোধে বৃষ্টির প্রভাব উল্লেখযোগ্য।
শেরপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মালেক বলেন,
“অনেকদিন ধরেই আমরা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আল্লাহর রহমতে অবশেষে সেই বৃষ্টি এসেছে। আমার জমিতে এখন প্রাণ ফিরে এসেছে।”
বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে
স্থানীয় ফতেহ আলী ও শেরপুর বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা জানান, বৃষ্টির ফলে শাকসবজি উৎপাদন বাড়বে এবং বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দামও নিয়ন্ত্রণে আসবে। এতে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ভোক্তারাও স্বস্তি পাবেন।
কৃষি কর্মকর্তাদের অভিমত
জেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান,
“এই বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। শুধু কৃষি নয়, পরিবেশও অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। তাপদাহের পর স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে।”
তবে কিছু নিচু এলাকায় স্বল্পস্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জি এম মাসুদ বলেন,
“এই বৃষ্টি ধান ও গ্রীষ্মকালীন সবজির জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই কৃষকদের নিকাশি ব্যবস্থা সচল রাখতে ও ক্ষেত পর্যবেক্ষণে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।”
আবহাওয়া পূর্বাভাস
বগুড়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই বৃষ্টিপাত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হচ্ছে এবং আগামী তিন থেকে চার দিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।