
রংপুর ও দিনাজপুরের মধ্যবিন্দু সৈয়দপুরে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী ১০০০ শয্যার হাসপাতাল গড়ে তোলার দাবি দিন দিন জোরালো হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সৈয়দপুরে রেলওয়ের ৫০ বিঘা অব্যবহৃত জমি রয়েছে, যা মন্ত্রণালয় টু মন্ত্রণালয় হস্তান্তরের মাধ্যমে পাওয়া যাবে— এতে জমি অধিগ্রহণে কোনো অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে না।
ভৌগোলিক অবস্থান এবং চতুর্মুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা সৈয়দপুরকে এই হাসপাতালের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সৈয়দপুর থেকে রংপুর ও দিনাজপুর দুই দিকেই দূরত্ব মাত্র ৩৬ কিলোমিটার। এই শহরে সড়ক, রেল ও আকাশপথের সংযোগ থাকায় উত্তরাঞ্চলের আট জেলার মানুষ সহজেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত করতে পারে।
সৈয়দপুরের পাশে অবস্থিত উত্তরা ইপিজেডে প্রায় ৫০টি চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে তিন হাজারেরও বেশি চীনা নাগরিক কাজ করেন। তাছাড়া বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্প ও বিদ্যুৎকেন্দ্রেও রয়েছে চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা, যারা প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দর হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন। স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের হাসপাতাল স্থাপন করা হলে তারা সহজেই চিকিৎসাসেবা পাবেন।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরও অচিরেই আন্তর্জাতিক হাবে রূপ নিতে যাচ্ছে। রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে, হাসপাতালটি এখানে হলে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জন্য চিকিৎসা সুবিধা আরও সহজলভ্য হবে।
সৈয়দপুর নাগরিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন জাভিস্কো বলেন, “চীনা প্রস্তাবিত এই হাসপাতাল সৈয়দপুরে হলে উত্তরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ কম খরচে উন্নত চিকিৎসা পাবে।”
রোটারিয়ান ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “শিলিগুড়ি ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর জেলার মানুষ সহজেই সৈয়দপুরে এসে চিকিৎসা নিতে পারবে, এতে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হবে।”
সাবেক পৌর কাউন্সিলর আকতার হোসেন ফেকু বলেন, “রেলওয়ের জমি কাজে লাগিয়ে কোনোরকম ব্যয় ছাড়াই হাসপাতাল নির্মাণ সম্ভব। এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।”
এছাড়া প্রাক্তন এমপি ও বিএনপি নেত্রী বিলকিস ইসলাম বলেন, “চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ককে আরো জোরদার করতে এবং শহীদ জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত সৈয়দপুরে এই হাসপাতাল স্থাপন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে।”
জনমত, ভৌগলিক অবস্থান, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং চীনা নাগরিকদের উপস্থিতি বিবেচনায়, সৈয়দপুরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী ১০০০ শয্যার হাসপাতাল স্থাপন এখন সময়ের দাবি বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।