
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় এবছর ইরিবোর ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই মুক্ত পরিবেশে ধানের শীষে ফলন হয়েছে আশাতীত। কৃষকরা এখন ধান কাটার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ফুলবাড়ীর সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সবুজ ধান এখন পেকে সোনালি রঙে রূপ নিয়েছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি শীষ, যা দেখে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে স্বস্তির হাসি।
দুই সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটার কাজ পুরোদমে শুরু হবে। কাজিহাল ইউনিয়নের কৃষক মোঃ নুর ইসলাম জানান, “আমরা পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে দু'বার ধান চাষ করে থাকি। এবার ধান যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি এর বিচালিও ভালো মানের গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করা যাবে।”
শিবনগর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ আব্দুল হামিদ বলেন, “আমি এবার দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ধান খুব ভালো হয়েছে। আগামী এক-দুই সপ্তাহ পর ধান কাটা শুরু করবো। কিছু নিজের খোরাকের জন্য রেখে বাকিটা বিক্রি করবো। মাঠের অবস্থা দেখে খুব আশাবাদী। তবে হঠাৎ কোনো কালবৈশাখী ঝড় বা শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় আছি। ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছি না।”
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, “চলতি মৌসুমে ফুলবাড়ীতে ইরিবোর ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ হাজার ১৩৮ হেক্টর জমিতে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ হাজার মেট্রিক টন। এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমন না থাকায় এবং রোগবালাইও কম থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি এবং ঝড়-শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা মাথায় রেখে দ্রুত ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছি। গত বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানের উৎপাদন ফুলবাড়ীতে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।”
এই বাম্পার ফলনের সুবাদে কৃষকেরা যেমন খুশি, তেমনি দেশের খাদ্যনিরাপত্তার জন্যও এটি একটি সুখবর।