
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পোষা গোখরা (গোমা) সাপের কামড়ে শাকিল ইসলাম (৩১) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। শাকিল খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের গারপাড়া গ্রামের ফরমাজ আলীর বড় ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাকিল একজন গুনিক (মাহান) ছিলেন এবং সাপ ধরাসহ বিভিন্ন বিষধর প্রাণী নিয়ে খেলা করতেন। রমজান মাসের কিছুদিন আগে তিনি একটি গোখরা সাপ ধরে বাড়িতে নিয়ে এসে তা পুষতে শুরু করেন। মঙ্গলবার দুপুরে সেই পোষা সাপ হঠাৎ করে তাকে কামড়ে দেয়।
প্রথমে বিষয়টি গোপন রেখে নিজে নিজেই বিষ নামানোর চেষ্টা করেন শাকিল। তবে অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে এক গুনিকের কাছে নিয়ে যান। সেখানেও বিষ নামাতে ব্যর্থ হলে দ্রুত তাকে দিনাজপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসার পর স্থানীয়দের মধ্যে "অলৌকিকভাবে ফিরে আসা" বিশ্বাস থেকে আবারও ঝাড়ফুঁকের আয়োজন করা হয়। সারা রাত ধরে চলে ওঝা ও গুনিকদের ঝাড়ফুঁক, যা দেখতে ভিড় জমায় অসংখ্য উৎসুক মানুষ। পরদিন বুধবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে শাকিলকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা যায়, এর আগেও একবার পোষা সাপটি শাকিলকে কামড় দিয়েছিল, তবে তখন তেমন কিছু হয়নি। কিন্তু এবার সেই সাপের কামড়েই তার জীবন শেষ হয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই সাপটিকে মেরে ফেলে।
খামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, “শাকিলকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। সে পেশাদার গুনিক ছিল এবং অনেক সময় তাকে সাপ নিয়ে খেলতেও দেখেছি। আমিও তার মাধ্যমে মৌমাছির চাক কেটেছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াল সেই খেলনার সাপই।”