
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়েছে। গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনাজপুর জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন সেবাখাত ও কার্যক্রম সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়।
অভিযানে উঠে আসে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র
বহির্বিভাগে সরকার নির্ধারিত ৩ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
স্টকে থাকা ওষুধের রেজিস্টার ২০২২ সালের পর থেকে হালনাগাদ করা হয়নি।
জরুরি বিভাগে ওয়ার্ড বয় হেলাল রোগীদের ক্ষত স্থানে সেলাই করছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বিপজ্জনক।
প্যাথলজি বিভাগের কর্মচারী আল-আমিন ও আরেফিন রিপোর্টের রিসিভ না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছেন।
এক্স-রে বিভাগের মনোরঞ্জন ও শাহনেওয়াজ রিপোর্টের টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আবাসিক রোগীদের জন্য নিম্নমানের চাল ও নির্ধারিত গ্রাম ওজনে কম খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
হাসপাতালের অনেক জায়গায় অপরিষ্কার পরিবেশ বিরাজ করছে।
দুদক কর্মকর্তার বক্তব্য
সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, "প্যাথলজি ও এক্স-রে বিভাগে ২০-৩০ জনের টেস্ট করা হলেও রেজিস্টারে মাত্র ৬-৭ জনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। বাকিদের টাকা খসড়া কাগজে রেখে আত্মসাৎ করা হয়। খাবারের মান নিয়েও গুরুতর অসঙ্গতি দেখা গেছে। প্রতিদিনের খাবারে যেখানে ১০০ গ্রামের দেশি মুরগির মাংস দেয়ার কথা, সেখানে মাত্র ৪০ গ্রাম দেয়া হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, তদন্তের রিপোর্ট তৈরি করে দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে এবং প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তার প্রতিক্রিয়া
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আফরোজ লুনা বলেন, "দুদক যেসব অনিয়মের কথা বলেছে, তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং সচ্ছতা আনতে স্থানীয়ভাবে তদন্ত টিম গঠন করা হবে।"
এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন তারা।