রংপুরে সাংবাদিকদের উপর হামলা: নকলের ভিডিও করায় ক্যামেরা ভাঙচুর, পাঁচ সাংবাদিক আহত | Daily Chandni Bazar রংপুরে সাংবাদিকদের উপর হামলা: নকলের ভিডিও করায় ক্যামেরা ভাঙচুর, পাঁচ সাংবাদিক আহত | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১০ মে, ২০২৫ ২৩:০৮
রংপুরে সাংবাদিকদের উপর হামলা: নকলের ভিডিও করায় ক্যামেরা ভাঙচুর, পাঁচ সাংবাদিক আহত
জালাল উদ্দিন, রংপুর:

রংপুরে সাংবাদিকদের উপর হামলা: নকলের ভিডিও করায় ক্যামেরা ভাঙচুর, পাঁচ সাংবাদিক আহত

রংপুরের কাউনিয়ার মীরবাগ ডিগ্রি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলাকালীন সময় নকলের চিত্র ধারণ করায় বিজয় টিভির রংপুর ব্যুরো প্রধানসহ পাঁচ সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় ক্যামেরা, মেমোরি কার্ডসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। গুরুতর আহত সাংবাদিকরা বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন ব্যবহার, টয়লেটে বই-নোট রেখে নকল করার দৃশ্য ধারণ করছিলেন সাংবাদিকরা। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন ও তার অনুসারীরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান।

আহত সাংবাদিকরা হলেন বিজয় টিভির ব্যুরো প্রধান হামিদুর রহমান হামিদ, ক্যামেরাম্যান শাহীন আলম সাবু, প্লাস টিভির রিপোর্টার মেহেদী হাসান, সহকর্মী মশিউর রহমান ও আল আমিন।

সাংবাদিকদের দাবি, পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তর বিনিময়ের প্রমাণ পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং অধ্যক্ষের নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ওই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক তুহিন সাংবাদিকদের উপর প্রথম হামলা চালান এবং পরে শিক্ষার্থীদের উস্কে দেন।

সূত্র জানায়, পরীক্ষার আগে প্রতি রুমে মোবাইল ব্যবহার ও নকলের সুযোগ দিতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘চুক্তি’ হয়। অভিযোগ রয়েছে, ৪ ও ৫ মে পরীক্ষা কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেন অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার অভিযোগও উঠে আসে।

ঘটনার পর কাউনিয়া থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের হাতে ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সাংবাদিক জানান, পুলিশ কর্মকর্তার ইঙ্গিতেই শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।

হামলার পর অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক আপসনামা নেন বলে অভিযোগ করা হয়। এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, "কেন্দ্রে নকল ও সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বলেন, "পুলিশের কারও গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকরা মামলা করলে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।"