শেরপুরে সরকারি ভিত্তিমূল্য গোপন রেখে গরুর নিলাম, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ | Daily Chandni Bazar শেরপুরে সরকারি ভিত্তিমূল্য গোপন রেখে গরুর নিলাম, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২৫ ০২:২৩
শেরপুরে সরকারি ভিত্তিমূল্য গোপন রেখে গরুর নিলাম, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ
শুভ কুন্ডু, শেরপুর, বগুড়াঃ

শেরপুরে সরকারি ভিত্তিমূল্য গোপন রেখে গরুর নিলাম, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারে অনুষ্ঠিত গরুর নিলাম নিয়ে স্বচ্ছতা ও নিয়ম মানা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অংশগ্রহণকারী দরদাতারা। অভিযোগ উঠেছে, নিলামের আগে গরুর সরকারি ভিত্তিমূল্য প্রকাশ না করায় প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে এবং এতে অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে।

সূত্র মতে, গত ২১ মে সীমিত পরিসরে দরপত্রের মাধ্যমে মোট ৮৮টি গরু নিলামে তোলা হয়। এর মধ্যে ছিল ৪০টি গাভী, ৪৩টি ষাঁড় ও ৫টি বকনা। খামার কর্তৃপক্ষ ৮৭টি শিডিউল বিক্রি করলেও জমা পড়ে মাত্র ৪২টি দরপত্র। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন ২৫ জন। নিলামে সর্বমোট দর ওঠে ৫৭ লাখ ৪১ হাজার ৩৪৭ টাকা

প্রতিটি শিডিউলের মূল্য নির্ধারিত ছিল ৭৫০ টাকা। নিলাম কার্যক্রম তদারকিতে গঠিত সাত সদস্যের কমিটিতে ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিছুর রহমানসহ খামার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা।

দরদাতাদের অভিযোগ

নিলামে অংশ নেওয়া মো. ফেরদৌস ইসলাম জানান, “আমি বিডি-৮৬ ও বিডি-১৯৩৪ নম্বর দুটি গরুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা ছিলাম। নামও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আমাকে না জানিয়ে অন্যজনকে দেওয়া হয় গরুগুলো।”

একই অভিযোগ করেছেন মো. শহিদুল ইসলাম নামের আরেক দরদাতা। এছাড়া আরও কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে অভিযোগ করেন, ভিত্তিমূল্য প্রকাশ না করায় কেউ বেশি দর দিয়েছেন, আবার কেউ অংশ নিতে সাহস পাননি। ফলে প্রতিযোগিতায় অসঙ্গতি দেখা গেছে।

নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ

নিলামের শেষ দিন সর্বোচ্চ দরদাতাদের তালিকা খামারের দেয়ালে টানানো হলেও পরদিন তা ছিঁড়ে ফেলা হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ২০১৫ সালের "খামারসমূহ হতে গবাদিপশু-পাখি ও সম্পদ নিলাম বিক্রয় নির্দেশিকা" অনুযায়ী, নিলামের পূর্বে গরুর ভিত্তিমূল্য অফিস নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

খামার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

খামারের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম ভিত্তিমূল্য প্রকাশ না করার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট জবাব দেননি। তবে দরদাতা পরিবর্তনের বিষয়টি “দুই পক্ষের সাথে কথা বলে মীমাংসা করা হয়েছে” বলে জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিছুর রহমান চাঁদনী বাজার-কে বলেন, “একাধিক শিট ব্যবহারের কারণে ভুলবশত পাঁচটি গরুর ক্ষেত্রে কম দরদাতার নাম প্রকাশ হয়েছিল, পরে সংশোধন করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “নীতিমালায় উন্মুক্ত নিলামের ক্ষেত্রে ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ প্রযোজ্য, তবে সেটি প্রকাশ করা হয়েছিল কি না, আমি নিশ্চিত নই।”

প্রশ্ন রইল স্বচ্ছতা নিয়ে

সবশেষে, অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ, ভিত্তিমূল্য গোপন রাখা, তালিকা ছিঁড়ে ফেলা, এবং দরদাতা বদলের ঘটনা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, এই নিলাম প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়মের সুযোগ না থাকে।