ক্যান্সারে আক্রান্ত তাসলিমা বাঁচতে চায় | Daily Chandni Bazar ক্যান্সারে আক্রান্ত তাসলিমা বাঁচতে চায় | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৭ জুন, ২০২৫ ০২:২৮
ক্যান্সারে আক্রান্ত তাসলিমা বাঁচতে চায়
আল- মামুন, বগুড়া-

ক্যান্সারে আক্রান্ত তাসলিমা বাঁচতে চায়

তাছলিমা আক্তার (১২)। ছবি- আল- মামুন/চাঁদনী বাজার

মা... আমাকে বাঁচিয়ে নাও... আমি কি মরে যাবো? আমি তো ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম মা...” — ১২ বছরের তাছলিমার মুখ থেকে এমন আর্তনাদ শুনে কেঁপে উঠেছে পুরো গ্রাম। ফোঁটা ফোঁটা চোখের জল আর বুকচেরা কান্না নিয়েই জীবন ভিক্ষা করছে একটি শিশু—যার স্বপ্ন ছিল মানুষকে বাঁচানোর, অথচ আজ সে নিজেই মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।
 
বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বেতুয়াকান্দি গ্রামের দরিদ্র কৃষক তাজুল ইসলামের একমাত্র সন্তান তাছলিমা আক্তার। বয়স মাত্র ১২ বছর ৬ মাস। লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী এই মেয়েটির স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে একজন ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ গলা টিপে ধরেছে ভয়ংকর এক রোগ—বোন ক্যানসার।
 
ছয় মাস আগে তার বাম পায়ের হাড়ে ধরা পড়ে এই প্রাণঘাতী রোগ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাঁচতে হলে দ্রুত অস্ত্রোপচার ও পরবর্তী কেমোথেরাপি দরকার। খরচ প্রায় ২০ লাখ টাকা। অথচ দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে এই ব্যয় বহন করা অসম্ভব। তাছলিমার বাবা তাজুল ইসলাম মেয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে বাড়ির ভিটা ছাড়া সব জমি, গরু, এমনকি স্বর্ণালংকার পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন দিনমজুরের কাজ করে কোনো মতে বেঁচে আছেন।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় নিঃসাহায়ে পড়ে আছে তাছলিমা। দাঁড়াতে, এমনকি বসতেও অন্যের সাহায্য লাগে। চোখে পানি, ঠোঁটে কাঁপা কাঁপা স্বর—“আমি বাঁচতে চাই, প্লিজ আমাকে একটু বাঁচান...”।
 
তার মা শাজিনা আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “মেয়েটা সারাক্ষণ কেবল আল্লাহর কাছে বলছে—আমাকে বাঁচাও। একজন মা হয়ে এটা দেখা কতটা কষ্টের, সেটা বলে বোঝানো যাবে না। আমি অসহায়, একেবারেই অসহায়। সমাজের মানুষের কাছে আমার আকুল আবেদন—একটু সহায়তা করুন, আমার মেয়েটাকে বাঁচিয়ে দিন।”
 
ভাই শাখিন আহম্মেদ জানায়, “তিনটি কেমোথেরাপি নেওয়ার পর বাবার আর কিছুই ছিল না। আমি নিজেও লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছি বোনের চিকিৎসার জন্য। এখন আর কোনো উপায় নেই। শুধু অপেক্ষা করছি কোনো মিরাকলের, কোনো সহৃদয় মানুষের সহায়তার।”
 
তাছলিমার চিকিৎসা চলছে সিরাজগঞ্জের খাঁজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সময়মতো অপারেশন ও চিকিৎসা না হলে তাছলিমাকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়।
 
স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গ্রামবাসী ও ঈদগাহে চাঁদা তুলে কিছু টাকা দিয়েছিলাম, কিন্তু এত ব্যয়ের তুলনায় তা খুবই সামান্য। আমি সবার কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি—আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি জীবন বাঁচাই।”
 
এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, “আবেদন পেলে যথাযথ যাচাই করে সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
 
 
তাছলিমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য:
মোবাইল (বিকাশ/নগদ): ০১৭৯১৭৩৬৬০৫
সোনালী ব্যাংক, গাবতলী শাখা
অ্যাকাউন্ট নম্বর: ০৬১৩০০১০৩৫৭২৭
হিসাবধারীর নাম: তাজুল ইসলাম