
রেলওয়ে নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও নীলফামারীর সৈয়দপুরে থামছে না রেলওয়ের লোহা চুরি। প্রায় প্রতি মাসেই লাখ লাখ টাকার স্ক্র্যাপ লোহা চুরি হলেও বেশির ভাগ ঘটনা থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।
গত ২৩ জুন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বগিসপ থেকে স্ক্র্যাপ লোহা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাতে-নাতে ধরা পড়েন রেলওয়ের অস্থায়ী দুই শ্রমিক—জসিয়ার রহমান (৩২) ও মো. সোহাগ (৩৩)। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ ওই দিনই তাদের চাকরিচ্যুত করেন।
এর আগে, ১৯ জুন সৈয়দপুর রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা দুই পিকআপ ভর্তি রেললাইন চোরাই লোহা বাজারে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামে এবং সত্যতা পেয়ে ওই দিনই তাকে আটক করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে পার্বতীপুরে দায়িত্বরত সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় এক আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাতজনকে আসামি করা হয়।
চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, আটক প্রকৌশলীর কার্যালয়টি সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে, এবং নিকটেই রয়েছে স্টেশন চত্বর ও প্ল্যাটফর্ম—যেখানে নিয়মিত টহলে থাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তা সত্ত্বেও দিনের আলোয় লোহা পাচার হওয়ার ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।
অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, রেলওয়ের মালামাল চুরি হচ্ছে অথচ রেলওয়ে পুলিশ কিছুই জানছে না—এটা অবিশ্বাস্য। তাদের মতে, রেলওয়ে পুলিশের দায়িত্বে গাফিলতির কারণেই এসব চুরি বন্ধ হচ্ছে না।
তবে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ-উন নবী অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, “রেল পুলিশের মূল দায়িত্ব ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মালামাল রক্ষার দায়িত্ব রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ বলেন, “রেলওয়ের যেকোনো দুর্নীতির ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।”
রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।