
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা ইউনিয়নের জগজীবনপুর আলমের দহ পশ্চিমপাড়ার শতাধিক পরিবারের প্রায় ৫০০ মানুষের জন্য যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে এক অমীমাংসিত সমস্যা। প্রায় তিন দশক ধরে ওই এলাকার বাসিন্দারা একটি ব্রিজের অভাবে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। শুধু চলাচলের জন্য নয়, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং কৃষিপণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও তারা সমস্যায় পড়েছেন। এমনকি, মৃত্যু ঘটলে মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে যাওয়ারও কোনো ব্যবস্থা নেই।
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় সলঙ্গার জগজীবনপুরের ভিতর দিয়ে একটি খালের সৃষ্টি হয়, যা পরে আলমের দহ নামে পরিচিতি পায়। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত, এই খালের উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য তাদের দাবি কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে, পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দাদের প্রধান সড়কের সাথে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সবার প্রাণের দাবি, দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হোক, যাতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সহজ ও নিরাপদ হয়।
পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল করিম, রহমত আলী, আব্দুল মজিদ এবং মাওলানা মোস্তফা কামালসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, "ব্রিজ না থাকার কারণে প্রতিদিনের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বিশেষত, শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বাজারে যেতে এবং অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুঃসহ কষ্ট পেতে হয়। আমাদের সমস্যা এতটাই গুরুতর যে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।"
সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং সলঙ্গা থানা শাখা জামায়াতের আমির রাশেদুল ইসলাম শহিদ বলেন, "জগজীবনপুর পশ্চিমপাড়া এখন একটি বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে। এখানকার মানুষের কষ্টের সীমা নেই। বিশেষত, একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা, যদি কেউ মারা যায়, তাহলে লাশ কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে নেয়া একেবারেই অসম্ভব। তাই, আমাদের একমাত্র দাবি হলো, আলমের দহে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হোক, যাতে এখানকার মানুষের ভোগান্তি শেষ হয়।"
এ বিষয়ে স্থানীয় এলজিইডির উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল্লাহ জানান, "আমরা ওই স্থান পরিদর্শন করেছি। যদি ব্রিজ নির্মাণের জন্য উপযুক্ত মনে হয় এবং খালের দুই পাশের রাস্তা আইডি ভুক্ত থাকে, তাহলে ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।"
এলাকার মানুষের আশা, দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।