
কৃষকের মুখে হাসি ফোটার আগেই কাঁচাবাজারে লেগেছে দাম বৃদ্ধির আগুন। টানা বৃষ্টির ফলে মরিচ ও সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বগুড়ার বিভিন্ন হাট-বাজারে হঠাৎ করেই সবজির দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। কাঁচা মরিচ ও বেগুনের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের ভোক্তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পৌরসভার বৈকাল বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে ৫০ টাকার বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে।
সবজির তালিকায় আগুন ছড়াচ্ছে আরও কিছু পণ্য
করলা, শসা, ঢেঁড়স: ৪০ টাকা কেজি
কচুর মুখী: ৫০ টাকা
পটল: ৩০ টাকা (যা আরও বাড়তে পারে)
পেঁপে: ২৫ টাকা
পালং শাক: ৮০ টাকা কেজি
লাল শাক: ২০ টাকা প্রতি আটি
তবে, আপাতত পেঁয়াজ (৫০ টাকা) ও আলুর (২০ টাকা) দাম স্বাভাবিক রয়েছে। আদা ও রসুনও রয়েছে পূর্বের দামেই (১০০ টাকা কেজি)।
মাছ-মাংসের বাজারে কিছুটা স্বস্তি
মাছের বাজারে এখন পর্যন্ত স্থিতিশীলতা দেখা গেছে।
রুই মাছ: ২৫০ টাকা
তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প: ২০০ টাকা কেজি
মাংসের বাজারেও বড় কোনো পরিবর্তন নেই—
ব্রয়লার মুরগি: ১৬০ টাকা
দেশি মুরগি: ৩০০ টাকা
গরুর মাংস: ৬৫০–৭০০ টাকা
খাসির মাংস: ১০৫০–১১০০ টাকা
সবজির দামে আগুন কেন?
শেরপুরের সবজি বিক্রেতা ইনসান হাসান বলেন, “টানা বৃষ্টিতে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে চলেছেন। কেউ কেউ বলছেন, “মরিচ তো এখন সোনার চেয়ে দামী!”
আগে কৃষকের কান্না, এখন ভোক্তার
উল্লেখ্য, মাত্র ২০ দিন আগেও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছিল ৫ থেকে ১০ টাকায়। উৎপাদন খরচ (১২–১৫ টাকা) না ওঠায় কৃষকরা তখন হতাশায় ছিলেন। বগুড়ার সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, শেরপুর, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও গাবতলী উপজেলায় এবার মরিচের ব্যাপক আবাদ হলেও অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত হয়েছে ফলন।
সমাধানের দাবি
ভোক্তাদের একাংশ বলছেন, বাজারে সরকারের তদারকি জোরদার করা এবং আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, না হলে এই অস্বাভাবিক বাজারদর ভোগান্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করে তুলবে।