বগুড়ায় নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে: কবরস্থান, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকিতে | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে: কবরস্থান, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকিতে | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০২৫ ০২:৫৭
বগুড়ায় নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে: কবরস্থান, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকিতে
এনামুল হক, শেরপুর, বগুড়াঃ

বগুড়ায় নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে: কবরস্থান, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকিতে

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বাঙালি ও করতোয়া নদীর তীব্র ভাঙনে আবাদি জমির পাশাপাশি কবরস্থান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিবছর বর্ষায় নদীভাঙন প্রতিরোধে নেওয়া অস্থায়ী উদ্যোগগুলো কার্যকর না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সরেজমিনে উপজেলার খানপুর, সুঘাট ও মির্জাপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, নদীভাঙনের ভয়াবহতা এ বছর নতুন মাত্রা পেয়েছে। খানপুর ইউনিয়নের বড়ইতলী ও বিলনোথার গ্রামে বাঙালি নদীর ভাঙনে যথাক্রমে প্রায় ২৫০ ও ৪০০ মিটার এলাকা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে শতাধিক বিঘা আবাদি জমি ভেঙে গেছে।

সুঘাট ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টেও নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। মির্জাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াবালা গ্রামে করতোয়া নদীর ভাঙনে একাধিক কৃষকের জমি এবং একটি এতিমখানা, মাদ্রাসা ও কবরস্থান ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।

ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন গ্রামবাসী

ভাঙনের আশঙ্কায় বড়ইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াবাড়ি বেসরকারি বিদ্যালয়, বরিতলী জামে মসজিদ, নুরানি মাদ্রাসা, কবরস্থান ও মক্তব রয়েছে সরাসরি হুমকিতে।
এ ছাড়া বড়ইতলি, বিলনোথার, নবীনগর, শইলমারি ও শান্তিনগর গ্রামের শত শত পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বড়ইতলি গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, “নদী আমাদের সব কেড়ে নিচ্ছে। গত বছরও জমি ছিল, এখন কিছুই নেই। আমরা কোথায় যাব?”
বিলনোথার গ্রামের বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, “প্রতি বছরই ভাঙে, কিন্তু কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এই বুঝি আমাদের ঘরও চলে যায় নদীতে।”
শইলমারির ফজল জানান, “গত বছর ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল, কিন্তু তা কোনো কাজেই আসেনি। আবার নতুন করে ভাঙছে।”

চাহিদা টেকসই বাঁধের

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতিবছর জিও ব্যাগ বা বালুর বস্তা ফেলে সাময়িক প্রতিকার করা হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবি—স্থায়ী বাঁধ ও নদীতীর সংরক্ষণের জন্য টেকসই প্রকল্প গ্রহণ করা হোক।

কর্তৃপক্ষ যা বলছে

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিবারণ চক্রবর্তী বলেন, “বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানির চাপ ও প্রবল স্রোতের কারণে নদীর পাড় ভেঙে পড়ে। নাব্যতা থাক বা না থাক, বর্ষায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।”

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, “বড়ইতলীসহ ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”