আদমদীঘির শিশু মেঘা জান্নাতের রক্তনালিতে টিউমার | Daily Chandni Bazar আদমদীঘির শিশু মেঘা জান্নাতের রক্তনালিতে টিউমার | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ০২:৪২
আদমদীঘির শিশু মেঘা জান্নাতের রক্তনালিতে টিউমার
বাঁচাতে বাবা-মায়ের আকুতি
উপজেলা সংবাদদাতা, আদমদীঘি, বগুড়াঃ

আদমদীঘির শিশু মেঘা জান্নাতের রক্তনালিতে টিউমার

 বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের মালশন গ্রামের দিনমজুর মোহন ও স্বরলিপি আক্তার দম্পতির একমাত্র সন্তান মেঘা জান্নাত। গত বছরের ১৩ নভেম্বর তাদের নিজ বাড়িতেই জন্ম নেয় এই ফুটফুটে কন্যা সন্তানটি। দুই সপ্তাহ পৃথিবীর আলো দেখার পর শিশুটির জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। রক্তনালিতে টিউমার আক্রান্ত হওয়ায় বিভিন্ন হাসপাতাল আর বহু মানুষের দুয়ারে ঘুরে শিশুটিকে বাঁচাতে টানা ৯ মাস যুদ্ধ করে যাচ্ছে বাবা-মা। সবার সহযোগিতা পেলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবে মেঘা জান্নাত। এখন মুখ ও গলায় বিস্তার হওয়া ঘা’য়ের অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না শিশুটির পরিবার। তাই সন্তানের প্রাণ বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান ও সরকারি সহায়তা কামনা করেন শিশুটির বাবা-মা।
শিশুটির মা স্বরলিপি আক্তার জানান, তার স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর। তিনি রাজমিস্ত্রি ও রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন। শিশুটি আক্রান্ত হওয়ার পর সোনা-গহনা বিক্রি করে চিকিৎসা শুরু করেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে যেটুকু ভিটে মাটি ছিল তাও বিক্রি করতে হয়েছে। এখন গ্রামবাসীর কিছুটা সহযোগীতা নিয়ে কোনো রকম চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। চিকিৎসা ও অপারেশন করাতে আরো প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে ডাক্তার তাদের জানিয়েছেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করানো হলেও এই রোগের কোনো আরোগ্য হচ্ছে না। দিন যাচ্ছে ঘা বাড়ছে। ফলে যন্ত্রণা নিয়েই দিন পার করছে ছোট এই শিশুটি। সবার সহযোগিতা পেলে হয়তো স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবে মেঘা জান্নাত।
মালশন গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান আলম স্বপন বলেন, এটা আসলেই হৃদয় বিদারক। আমার গ্রামের লোকজন কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তা দিয়ে উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ। যদি কেউ তাদের সহযোগিতা করতে চান তাহলে শিশুটির বাবার এই (০১৭৭২-৭৯১৯৬৭) মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছি। 
কান্নাজড়িত কন্ঠে শিশুটির বাবা মোহাম্মদ মোহন বলেন, হঠাৎ একটি লালচে ফুটনি বের হয়। সেটি অস্বাভাবিক ভাবে বড় হতে শুরু করে। চিকিৎসার জন্য মেঘা জান্নাতকে নিয়ে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেন্টাল ল্যাবে ১৫দিন চিকিৎসার পর স্বজনদের পরামর্শে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল ও পপুলারে এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকা বারডেম জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানকার ডাক্তাররা জানান- শিশুটির রক্তনালিতে টিউমাম হয়েছে। ৪ বছর বয়সের আগে শিশুটির অপারেশন করা সম্ভব নয়। নিরূপায় হয়ে শিশুটিকে মিরপুর হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি দেখে অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন, শিশুটিকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করালে হয়তো দ্রæত সুস্থ্য হয়ে উঠবে। এতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু শিশুটির পিছনে খরচ করতে করতে আমার বাড়িটি ছাড়া আর কিছুই নেই। কিভাবে জোগাবো এতো টাকা? কে বা দেবে এতো টাকা? তাহলে কি আমার মেঘা জান্নাত আর দশটি শিশুর মতো সুস্থ হয়ে উঠবেনা? নানা দুশচিন্তা নিয়ে দিন পার করছেন বাবা মোহন।     
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, বিষয়টি জানার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।