
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে সরকারি রাস্তার পাশে গাছ কেটে নেওয়ার মহোৎসব চলছে প্রকাশ্যে। কোনো অনুমতি ছাড়াই এভাবে গাছ কাটা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার ১নং বুলাকীপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দামোদরপুর সৌলা এলাকায় প্রায় ২০ বছরের পুরোনো অন্তত ৬০টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে। তিনি চকবয়রা গ্রামের সাহেব মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাটা গাছ ভ্যানে তুলে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এ কাজের নেতৃত্বে সরাসরি আছেন ইউপি সদস্য মিলন মিয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটছি।” তবে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সদের আলী খন্দকার জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং কোনো অনুমতিও দেননি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনের আলোয় গাছ কাটলেও উপজেলা প্রশাসন বা বন বিভাগ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “এই গাছগুলো শুধু রাস্তার সৌন্দর্য বাড়ায়নি, ঝড়-ঝাপটায় আমাদের সুরক্ষাও দিত। এখন কোনো কাগজপত্র ছাড়াই কাঠ ভ্যানে তোলা হচ্ছে—এটা চুরি ছাড়া কিছু নয়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। মেম্বারকে গাছ না কাটতে নিষেধ করেছি।” তবে সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গাছ কাটা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পুনরায় অবহিত করলে ইউএনও সংক্ষেপে বলেন, “আপনার যা করণীয় আছে তা করেন।”
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি রাস্তার গাছ কাটতে হলে প্রশাসনের অনুমতি আবশ্যক। কোনো ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধির পক্ষে অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বেআইনি, যা বন আইন ও সড়ক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মসজিদের কাজ করার অজুহাত দেখিয়ে আসলে ব্যক্তিস্বার্থে গাছ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে। তারা অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।