
দৈনিক চাঁদনী বাজার অনলাইনে মহাস্থান মাজার এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের নিকট নকল ও নিম্নমানের পণ্য বিক্রির সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। মাজার মসজিদ কমিটি প্রতারক চক্রের তিনটি দোকানের ভাড়াস্বত্ব বাতিল করে দোকান সরিয়ে দেওয়ার নোটিশ জারি করে। পরবর্তীতে দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রতারণার কৌশল
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মহাস্থান মাজারে আগত জিয়ারতকারী ও দর্শনার্থীদের কাছে প্রতারণামূলকভাবে পণ্য বিক্রি করছিল। কেউ মাজারে প্রবেশ করলে তাদের হাতে জোরপূর্বক আতর, গোলাপজল বা আগরবাতি ধরিয়ে দেওয়া হতো। এরপর বলা হতো—“ওই জায়গায় ঢালুন” বা “এটা ব্যবহার করুন”—এবং পরে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বকশিশ বা হাদিয়া দাবি করা হতো।
এভাবে মাত্র ২০ টাকার গোলাপজল ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হতো। একইভাবে নিম্নমানের আতর ও আগরবাতিও কয়েকগুণ বেশি দামে জোরপূর্বক বিক্রি করা হতো। এসব প্রতারণার কারণে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছিল এবং মাজারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল।
কর্তৃপক্ষের নোটিশ
এ বিষয়ে মহাস্থান মাজার মসজিদ কার্যালয়ের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ. এইচ. এম রবিউল করিম স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, একাধিকবার সতর্ক করার পরও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ না করায় কমিটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। নোটিশে তিনটি দোকানের ভাড়াস্বত্ব বাতিল করে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নিজ দায়িত্বে দোকান সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
উচ্ছেদ হওয়া দোকানসমূহ
ভাড়াস্বত্ব বাতিল হওয়া তিন দোকান হলো—
১। দোকান নং- ৮৭ : মো. মেহেদী হাসান, পিতা- টুকু মিয়া, গোকুল।
২। দোকান নং- ৯৩ : মো. জাহিদুল ইসলাম, পিতা- মৃত মফিজ, গোকুল।
৩। দোকান নং- ৯৬ : মো. ফুল মিয়া, পিতা- মফিজ, গোকুল।
উল্লেখ্য, দৈনিক চাঁদনী বাজার-এর অনলাইন বিভাগে এ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। এর পরপরই মাজার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয় এবং প্রতারক তিন দোকান উচ্ছেদ করে মাজার এলাকা প্রতারণামুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মাজার কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের প্রশংসা
সচেতন মহল মনে করছে, এ সিদ্ধান্তে যেমন প্রতারক ব্যবসায়ীরা চিহ্নিত হলো, তেমনি মাজারের পবিত্র পরিবেশ ও ভাবমূর্তি রক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। স্থানীয়রা মাজার কর্তৃপক্ষের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও এমন তৎপরতা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।