সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় নিখোঁজের দুই মাস পর অটো মিশুকচালক আমিরুল ইসলামের — বয়স ২০ বছর — হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত অটো মিশুকের যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, সলঙ্গা থানার অলিদহ গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম গত ৫ আগস্ট ভাড়ার উদ্দেশ্যে অটো মিশুক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন, এরপর আর ফিরে আসেননি। পরিবারের খোঁজাখুঁজি ব্যর্থ হলে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
দীর্ঘ দুই মাস পর — ১৮ অক্টোবর — রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চক নিহাল গ্রামের একটি ডোবার কচুরিপানার নিচে ভাসমান কঙ্কাল দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে আমিরুলের মা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরনের প্যান্ট দেখে কঙ্কালটি তার ছেলের বলে শনাক্ত করেন। এতে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
ঘটনার পর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তে নেয় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার — ক্রাইম অ্যান্ড অপস — মো. হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার — ডিবি — একটি বিশেষ দল তদন্ত শুরু করে।
গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে সলঙ্গার চক নিহাল গ্রাম থেকে মো. সাহেব আলী প্রামানিক — বয়স ২৫ বছর — ও মো. মনিরুজ্জামান সরকার — বয়স ৪৪ বছর — এবং তাড়াশ উপজেলা থেকে মো. আব্দুল আজিম প্রামানিক — বয়স ৩১ বছর — কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা আমিরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অটো মিশুকের যন্ত্রাংশ — হ্যান্ডেল, মিটার, হেডলাইট, তিনটি টায়ার, লোহার বডি ও চারটি ব্যাটারি — উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে আদালতে নেওয়া হলে তিনজনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশ বলছে, পরিকল্পিতভাবে আমিরুলকে হত্যা করে তার অটো মিশুক লুট করে বিক্রি করেছিল তারা।