জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ (৪৫) নামে এক যাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ের হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যাত্রী রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত আছেন।
ঘটনার সূত্রপাত টিকিট কাউন্টারে
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পাবনা যাওয়ার জন্য আব্দুর রাজ্জাক দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটতে জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারে যান। তিনি দুইশ টাকার একটি নোট দেন। কাউন্টার থেকে খুচরা টাকা দিতে বলা হলে তিনি জানান, খুচরা টাকা নেই।
এসময় হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুন তাকে খুচরা আনার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
একপর্যায়ে মনিরুল করিম কাউন্টার থেকে বেরিয়ে এসে যাত্রীকে ধাক্কা দেন। পরে তাকে টেনে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে এবং কাউন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই যাত্রীর শার্ট ছিঁড়ে যায়। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ
আব্দুর রাজ্জাক বলেন,
“স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়ে বুকিং সহকারী মনিরুল করিম আমাকে টেনে নিয়ে অফিসে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করেছে। তারা এক লাইনে টিকিট না দিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে। আমি সরকারি কর্মচারী হয়েও এমন অপমানের শিকার হয়েছি। তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
অভিযুক্ত বুকিং সহকারীর বক্তব্য
মনিরুল করিম মুন বলেন,
“খুচরা টাকা না থাকা নিয়ে ওই যাত্রী আমাকে গালিগালাজ করেছিল। এতে কথাকাটাকাটি হয় এবং সামান্য ধস্তাধস্তি হয়। আমি তাকে টেনে আনিনি। পরে সবার উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে।”
স্টেশন মাস্টার ও রেল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
জয়পুরহাট রেলস্টেশনের মাস্টার রফিক চৌধুরী বলেন,
“বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে ঠেলাঠেলি হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ধাক্কাধাক্কি বা মারধরের ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তা সরকারি বিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মুন যাত্রীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছে।”
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন,
“সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এমন আচরণের সুযোগ নেই। আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরবর্তী ব্যবস্থা
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রমাণ মিললে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।