রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারিয়ে কর্মহীন রফিকুল; সন্তানের পড়াশোনা অনিশ্চিত | Daily Chandni Bazar রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারিয়ে কর্মহীন রফিকুল; সন্তানের পড়াশোনা অনিশ্চিত | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ০১:৩৪
রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারিয়ে কর্মহীন রফিকুল; সন্তানের পড়াশোনা অনিশ্চিত
আমিনুল ইসলাম হিরো, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জঃ

রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারিয়ে কর্মহীন রফিকুল;  সন্তানের পড়াশোনা  অনিশ্চিত

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের তবাড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৪০) প্রায় চার মাস আগে টাঙ্গাইল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। উন্নত চিকিৎসার সময় জীবন রক্ষায় বাধ্য হয়ে তার দুটি পা কেটে ফেলতে হয়। এরপর থেকেই পুরো পরিবারে নেমে আসে অসহায় পরিস্থিতি।
 
দুর্ঘটনার আগে রফিকুলই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বর্তমানে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালানো তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে তাদের স্কুলপড়ুয়া ছেলে সিয়ামের পড়াশোনা।
 
রফিকুলের স্ত্রী সেফালি বেগম জানান, চিকিৎসার ব্যয়, ঋণ এবং সংসারের খরচ মিলিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্বামীর চলাফেরার জন্য একটি হুইলচেয়ার প্রয়োজন, পাশাপাশি চিকিৎসকেরা কৃত্রিম পা লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন—যার খরচ লাখ টাকার ওপরে। এসব মেটানোর মতো সামর্থ্য তাদের নেই বলেই জানান তিনি।
 
তাদের ছেলে সিয়াম, দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী, জানায়—বাবা কাজ করতে না পারায় তার স্কুলজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ভয় ও আশঙ্কার মাঝেই সে বলেছে, অন্যদের মতো স্কুলে যেতে চায়, কিন্তু টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
 
স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, সিয়াম অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। অভাবের কারণে তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া দুঃখজনক হবে। পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এখন জরুরি।
 
রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ভাতা, পুনর্বাসনসহ সরকারি সহায়তার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
 
স্থানীয়দের মতে, সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও সেবামূলক সংগঠনগুলো এগিয়ে এলে পরিবারটি নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
 
দুর্ঘটনার পর রফিকুলের জীবন থমকে গেলেও তার সন্তানের শিক্ষাজীবন এখন সবচেয়ে বড় সংকটে। প্রশ্ন একটাই—কেউ কি এগিয়ে এসে তাদের ভবিষ্যৎ বাঁচাবে?