বগুড়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া বেগম লাকি তার প্রতিবেশী হযরত আলী ও লতিফ সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন হয়রানি, বাধা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে জানান, তাদের পারিবারিক জমিতে বাড়ি নির্মাণ ও চলাচলের রাস্তা নিয়ে প্রায় চার দশক ধরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।

জমি ও বাড়ি নির্মাণ নিয়ে বিরোধ

রাবেয়া বেগম জানান, তার পিতা ১৯৮৪ সালে জমি ক্রয় করেন। বহু বছর একই গেট ও রাস্তা ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা নানা সময়ে সীমানা জটিলতা তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন,
— “প্রতিপক্ষ হযরত আলী তার বাড়ি সঠিক জায়গা বুঝে না করে নির্মাণ করেন। বহুবার আমাদের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেন। সীমানা প্রাচীর তুলে আমাদের প্রবেশপথ সংকুচিত করেন।”

২০০৫ ও ২০১২ সালে তিনি নির্যাতনের কারণে থানায় এবং মানবাধিকার সংগঠনে অভিযোগ করেন। ২০১৪ সালে আদালতে ‘প্রতিবন্ধকতা মামলা’ দায়ের করলে আলোচনার পর দেয়াল তৈরি হয় ও গেট ব্যবহার স্বাভাবিক থাকে।

হয়রানি ও হামলার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া বেগম জানান, সম্প্রতি বাড়ির নিচতলার নির্মাণকাজ চলাকালে প্রতিপক্ষ পুনরায় রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং অবৈধভাবে প্রায় ৮–১০ ফুট জায়গা দখল করে। বিষয়টি পৌরসভায় অভিযোগ করলে কর্তৃপক্ষ সীমানা নির্ধারণ করে পথ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

তিনি অভিযোগ করেন,
— “আমরা পৌরসভার নিয়ম মেনে কাজ করতে গেলে প্রতিপক্ষ হযরত আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দেয়। কয়েক দিন আগে তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর হামলা চালায়। রড দিয়ে আঘাত, কিল-ঘুষি, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। মহিলারা আমাকে লাঠি ও ঝাড়ু দিয়ে মারধর করে।”

এসময় তার ভাড়াটিয়ারা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।

অভিযোগ: অর্থ দাবি ও অবৈধ চাপ

লাকি দাবি করেন, প্রতিপক্ষ তাকে ৫ তলা ভবন না করলে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তিনি বলেন,
— “আমাদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকার বেশি পাবে বলে দাবি করে। হজ করেছে বলে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। বলে— ডিসি-এসপি কিছুই করতে পারবে না।”

প্রতিবেশীদের ভিডিও করে প্রচার

তিনি আরও জানান, প্রতিপক্ষ পরিবার হামলার সময় ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, যা তাদের মানসম্মান ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

ন্যায়ের জন্য আবেদন

রাবেয়া বেগম লাকি বলেন,
— “আমরা বছরের পর বছর নির্যাতন সয়ে এসেছি। এখন চলাচলের পথ অবৈধভাবে বন্ধ করে আমাদের জীবন অসহনীয় করে তুলেছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই। এই অমানবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটাবে।