সারা দেশের মতো বগুড়াতেও সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন। জেলার ১৩টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টির শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম বর্জন করেছেন। তবে বাকি সাতটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাসহ নিয়মিত কার্যক্রম চলছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিনই তিনি বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, রাজশাহী অঞ্চল কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে চিঠি দিয়ে জানান।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, বগুড়ার সরকারি স্কুলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবিধি না থাকা, পদোন্নতি-বঞ্চনা, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদ শূন্য থাকা—এ ধরনের সমস্যা চলমান। এছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে আলাদা করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। এসব কারণকে শিক্ষকরা শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার জন্য দায়ী করছেন।

এ অবস্থায় জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস)-এর ব্যানারে কর্মসূচি পালন করছেন।

যেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা বর্জন চলছে

বগুড়া জিলা স্কুল

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

গাবতলী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

সারিয়াকান্দি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

সান্তাহার হার্ভে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (আদমদীঘি)

নন্দীগ্রাম সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

যেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা ও কার্যক্রম চলমান

সরকারি চাঁচাইতারা মাদলা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয় (শাজাহানপুর)

শেরপুর সরকারি ডায়মন্ড জুবলী মডেল হাইস্কুল

কাহালু সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

দুপচাঁচিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

সরকারি সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ

শিবগঞ্জ সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন,
“বগুড়ার ১৩টি সরকারি স্কুলের মধ্যে শহরের দুটিসহ পাঁচটিতে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও পরীক্ষা কার্যক্রম বর্জন করেছেন। বাকি আটটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম চলছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

শিক্ষকদের চার দফা দাবি

১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্য পদগুলোতে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ।
৪. ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল রেখে গেজেট প্রকাশ।