প্রকাশিত : ৫ এপ্রিল, ২০১৯ ১৯:২৬

আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে লিবিয়া

অনলাইন ডেস্ক
আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে লিবিয়া

রাজধানী ত্রিপোলির নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে লিবিয়া। এরই মধ্যে এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে সেদেশর পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী সেনা কমান্ডার খালিফা হাফতার। তাদের প্রতিহত করতে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ।

আর পূর্বাঞ্চলকে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন লিবিয়ার জাতিসংঘ স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ সিরাজী। সংঘাতের মাধ্যমে লিবিয়া সংকট সমাধান সম্ভব নয় বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব সম্প্রদায়।

বুধবার (০৩ এপ্রিল) লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজিতে সামরিক সমাবেশ ঘটায় ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণকারী জেনারেল খালিফা হাফতারের অনুগত সেনারা। পরদিন তাদেরকে রাজধানী ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে যাত্রা করার নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, যারা সংঘাত চাইবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তার বাহিনী। এক অডিও বার্তায়, অন্যায়কারীদের উৎখাতে একে বিজয় যাত্রা বলেও অভিহিত করেন তিনি। নির্দেশনার পরই বিভিন্ন দিকে থেকে ত্রিপোলীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় হাফতার বাহিনী। এক সংবাদ সম্মেলনে পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসনের মুখপাত্র বলেন, কমান্ডার ইন চিফের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সামরিক অভিযান শুরু হবে।

লিবিয়া সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল মেসমারি বলেন, কোটি কোটি ডলার বিদেশে পাচার করেছে মিলিশিয়ারা। তারা হাজার মানুষকে বঞ্চিত করেছে। কমান্ডার ইন চিফের নির্দেশনা অনুযায়ী যারা ঘরে থাকবে, আত্মসমর্পণ করবে অথবা সাদা পতাকা উড়াবে তারা নিরাপদ থাকবে। সবধরনের নিয়মকানুন মেনেই আমরা এ ঘোষণা দিয়েছি। শিগগিরই সামরিক অভিযান শুরু হবে।

হাফতার বাহিনীকে রুখে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ সমর্থিত লিবিয়া সরকার। এছাড়া, সবধরনের হুমকি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে প্রতিহত করার জন্য সরকারপন্থী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ সিরাজী।

দু'পক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থার মধ্যেই বৃহস্পতিবার ত্রিপোলির একটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এসময় শরণার্থীদের কাছ থেকে তাদের সুখ-দুখের খোঁজখবর নেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সংঘাতের মাধ্যমে লিবিয়া সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, লিবিয়ার নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে। তাদের অধিকারকে সমর্থন জানাতে আমি এখানে এসেছি। জাতিসংঘের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই লিবিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা। সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধের পাশাপাশি সামরিক সেনাবাহিনী ও সরকার উভয়কে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

নতুন কোরে সংঘাত সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ইতালি এবং আরব আমিরাত। এক যৌথ বিবৃতিতে রাজনৈতিক উপায়ে লিবিয়ার সংকট সমাধানে সবপক্ষকে আলোচনার আহ্বান জানান তারা।

২০১১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর অভিযানে দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই টালমাটাল লিবিয়া। ক্ষমতার লড়াইয়ে মুখোমুখি দাঁড়ায় সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সশস্ত্র বিভিন্ন সংগঠন। সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেয়া উদ্যোগের মধ্যেই নতুন করে সংকটের মুখে লিবিয়া।

উপরে