প্রকাশিত : ৬ এপ্রিল, ২০১৯ ১৮:১৯

চীনের মুসলিম নিপীড়নের নিন্দায় নেমেও কিছু মুসলিম দেশ কেন পিছু হটল?

অনলাইন ডেস্ক
চীনের মুসলিম নিপীড়নের নিন্দায় নেমেও কিছু মুসলিম দেশ কেন পিছু হটল?

চীনের পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। ক্ষুদ্র এ নৃগোষ্ঠীর লোকেরা উইঘুর মুসলিম হিসেবে পরিচিত। এদের ওপর চীনা সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে। 

গত দু'বছর ধরে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের ফোনে গোয়েন্দাগিরি চলছে। দেশটির টেলিকমিউনিকেশন কম্পানীগুলোকে এ বিষয়ে নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছে চীনা সরকার। উইঘুর মুসলিমদের ধর্মীয় রীতিনীতি যেমন, দাঁড়ি রাখা এবং নামাজ পড়াও বেআইনি ঘোষণা করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

এখানেই থেমে নেই। অন্তত ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে এই মুসলিমদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

ওই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাক্টিভিষ্ট ও রাজনীতিকেরা। এমনকি জাতিসংঘও এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। 

পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে চীনে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদ জানাচ্ছে সেখানে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো এক্ষেত্রে এড়িয়ে চলার নীতি অবলম্বন করছে।

প্রথমদিকে দেশগুলো এ বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে তারা নিশ্চুপ হয়ে যায় কিংবা পিছু হটে যায়। 

গত ডিসেম্বরে ৫৭ মুসলিম দেশের সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-এর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চীনের নিপীড়নের বিষয়ে মুসলিম বিশ্বকে 'ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ' জানানোর আহবান জানানো হয়।

কিন্তু এরপরে মুসলিম দেশগুলোর পক্ষে এ বিষয়ে আর কোনো প্রতিবাদ বা উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি। কিন্তু কেন? 

ওআইসিভুক্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বেশ কয়েকটি দেশ বেজিংয়ের 'বেল্ট এণ্ড রোড ইনিশিয়েটিভ' অবকাঠামোগত প্রকল্পের কাছাকাছি স্থানে অবস্থিত। এই বিশাল প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশকে সংযুক্ত করাই বেজিংয়ের লক্ষ্য। 

মূলত এই প্রকল্পের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কারণেই ওআইসিভুক্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো চীনের মুসলিম নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পিছপা হয়েছে। এমনটা মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। 

ওই সংস্থাটির চীন বিষয়ক পরিচালক সোফি রিচার্ডসন সংবাদ সংস্থা বিজনেস ইনসাইডারকে জানান, চীনে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক (ওআইসি)। মূলত মুসলিম দেশগুলো এক্ষেত্রে নিন্দা জানানোর ওপরই নিজেদের আবদ্ধ রেখেছে। 

সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

উপরে