দেশত্যাগী ধনকুবেরদের তালিকায় তৃতীয় ভারত
দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পা রাখছেন ভারতীয় বিত্তশালীরা। গত বছর ভারত ছেড়েছেন অন্তত পাঁচ হাজার ভারতীয় ধনকুবের। সারা পৃথিবীতে দেশত্যাগী ধনকুবেরদের তালিকায় এখন চীন আর রাশিয়ার পরেই রয়েছে ভারত। ‘গ্লোবাল ওয়েল্থ মাইগ্রেশন রিভিউ রিপোর্ট ২০১৯’ নামের একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই বলা হচ্ছে।
গবেষণা পত্রে বিত্তশালী বলতে বলা হয়েছে ধনীদের কথা। অর্থনীতির ভাষায় এর নাম ‘এইচএনডাব্লিউআই বা হাই নেটওয়ার্দ ইন্ডিভিজুয়াল’। যাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ এক মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় সাত কোটি টাকা, তাদেরকেই রাখা হয়েছে বিত্তশালী বা ধনকুবেরদের তালিকায়। সারা পৃথিবীতে এই ধরনের বিত্তশালীদের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। তার মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই হল তিন লক্ষ ২৭ হাজার। বিত্তশালীদের সংখ্যার নিরিখে এখন নয় নম্বরে আছে ভারত।
নিরাপত্তার কারণে ভারতীয় বিত্তশালীরা দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পা রাখছেন। নিরাপত্তাহীনতার জন্যই তারা দেশে থাকা আর ঠিক বলে মনে করছেন না, এমনটাই বলা হয়েছে ওই গবেষণা পত্রে। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা হয়েছে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা, জলবায়ু, পরিবেশ, সন্তানের শিক্ষার কাঠামো, কাজের পরিবেশ, আর্থিক দুশ্চিন্তা, স্বাস্থ্য সেবার কাঠামো, জীবনযাত্রার মান এবং ধর্মীয় উত্তেজনা।
২০২৮ সালের মধ্যেই জার্মানি এবং ব্রিটেনকে টপকে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে এখন ভারত। আগামী দশ বছরের মধ্যে ভারতের জাতীয় উৎপাদন আট হাজার একশ ৪৮ বিলিয়ন ডলার (পাঁচ কোটি ৬৭ লক্ষ কোটি টাকা) থেকে বেড়ে ২২ হাজার আটশ ১৪ বিলিয়ন ডলার (১৫ কোটি ৮৮ লক্ষ কোটি টাকা) হবে, এমনটাই লক্ষ্যমাত্রা ভারতের। গত এক বছরে মোট উৎপাদন কমলেও এই মুহূর্তে পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত।
ভারতের মোট উৎপাদন বাড়তে থাকলেও একই সঙ্গে বাড়ছে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। অর্থাৎ বিত্তশালীদের সংখ্যা বাড়লেও আরও গরিব হচ্ছেন অর্থনীতির নিচের তলায় থাকা নাগরিকরা।
ভারতের ৪৮ শতাংশ সম্পত্তিই সাড়ে তিন লক্ষ মানুষের হাতে। বাকি ৫২ শতাংশ সম্পত্তি আছে প্রায় একশ ৩০ কোটি মানুষের হাতে। তাই বিত্তশালীরা দেশ ছাড়লে সেই সম্পত্তিও দেশ ছাড়ার আশঙ্কায় থেকে যায়। দেশের অর্থনীতি ও সমাজকে নিরাপদ করার মাধ্যমে বিত্তশালীদের দেশ ছাড়ার সংখ্যা কমানো যেতে পারে বলে বলা হয়েছে গবেষণাপত্রটিতে।