প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারী, ২০২১ ০৯:৩৭

লাদাখ সীমান্তে শান্তি ফেরাতে ঐকমত্যে ভারত-চীন

অনলাইন ডেস্ক
লাদাখ সীমান্তে শান্তি ফেরাতে ঐকমত্যে ভারত-চীন

লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) উত্তেজনা কমাতে দ্রুত মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পেছানোর বিষয়ে একমত হয়েছে ভারত-চীন।দুই দেশের মধ্য নবম দফার সামরিক স্তরের বৈঠকের পর এ সংক্রান্ত এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে বলে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

সিকিমের নাকু লা সীমান্তে ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পরেও নয়াদিল্লির এই অবস্থানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে ধারাবাহিক আলোচনার পাশাপাশি দুপক্ষই মুখোমুখি অবস্থানকারী বাহিনীকে সংযত রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে। সেনা সংখ্যা কমানোর বিষয়টি দশম দফার বৈঠকে আলোচনা হবে।

গত রোববার (২৪ জানুয়ারি) দক্ষিণ-পূর্ব লাদাখে চুশুল লাগোয়া মলডো পয়েন্টে আয়োজিত ওই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন লেহ্র ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। অন্যদিকে চীনা সৈন্যদের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন শিনজিয়াং মিলিটারি রিজিয়ন কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন।

এর আগে গত ৬ নভেম্বর অষ্টম দফার বৈঠকে এ সংক্রান্ত তিনটি পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো দুই দেশ কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। ওই বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছিল, প্যাংগং হ্রদের উত্তর তীরের ফিঙ্গার-৫ থেকে চীনা সেনারা যেন ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত টহল দিত ভারতীয় সেনা। কিন্তু এর পরে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এলএসি লঙ্ঘন করে ফিঙ্গার-৪ পর্যন্ত এগিয়ে আসে বলে অভিযোগ।

অন্যদিকে, চীনের পক্ষ থেকে ওই বৈঠকে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে এলএসি বরাবর রেচেলা থেকে রেজিংলা পর্যন্ত উঁচু জায়গাগুলোতে অবস্থান নেয়া ভারতীয় সেনাকে পেছনোর দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু তখন কোনো পক্ষই অবস্থান বদলাতে রাজি হয়নি।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গত শনিবার বলেছিলেন, এলএসিতে মোতায়েন চীনা সেনার সংখ্যা কমানো না হলে ভারতও একতরফাভাবে সেনা কমাবে না।

গত বছরের ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে সংঘর্ষের পরে দুই দেশের কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পেছনোর পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ৫ জুলাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইর ভার্চুয়াল বৈঠকের পরে পূর্ব লাদাখের কয়েকটি এলাকায় তা কার্যকরও হয়। কিন্তু প্যাংগং হ্রদের দুই তীর এবং দেপসাং এলাকায় চীনা সেনারা পিছিয়ে যায়নি বলে ভারতীয় সেনাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

এরই মধ্যে উত্তর সিকিমের নাকু লায় গত ২০ জানুয়ারি অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চীনা সেনারা। অন্তত ২০ জন চীনা সেনা ওই সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ ঘটনায় চার ভারতীয় সেনাও জখম হন বলে জানা যায়। এর পরই আবার বৈঠকে বসে দুই দেশ। পরে নবম দফার বৈঠকে নতুন এ সিদ্ধান্ত এলো।

উপরে