প্রকাশিত : ৭ মার্চ, ২০২১ ০৯:৫০

ভারতে আশ্রয় নেয়া পুলিশ সদস্যদের ফেরাতে মিয়ানমারের চিঠি

অনলাইন ডেস্ক
ভারতে আশ্রয় নেয়া পুলিশ সদস্যদের ফেরাতে মিয়ানমারের চিঠি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা বা বিধানসভা ভোট এলেই তারকা প্রার্থীদের মঞ্চে আগমন নিশ্চিত। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই তৃণমূল এবং বিজেপি শিবিরে ভিড় বাড়ছে তাদের। তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় দেখা যাচ্ছে বড় এবং ছোট পর্দা মিলিয়ে নতুন অন্তত নয়জন নামছেন ভোটের লড়াইয়ে।

তারকাদের কেন প্রার্থী করে রাজনৈতিক দলগুলো? আনন্দবাজারের এক বিশ্লেষণ বলছে, প্রকাশ্য উদ্দেশ্য তাদের জনপ্রিয়তা এবং গ্ল্যামারকে ভোট টানতে ব্যবহার করা। কিন্তু পাশাপাশি কিছু নিহিত উদ্দেশ্যও থাকে।

প্রথমত, গোষ্ঠীলড়াই এড়ানো। যেসব কেন্দ্রে দলীয় টিকিটের একাধিক দাবিদার, সেখানে তারকা প্রার্থীকে টিকিট দিলে বিবাদমান দুই গোষ্ঠী একজোট হয়ে তাকে জেতাতে চেষ্টা করবে।

দ্বিতীয়ত, যেহেতু এসব তারকার সে অর্থে ‘জনভিত্তি’ নেই এবং তারা তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি করেননি, রাজনীতিকে ‘পেশা’ হিসেবেও দেখেন না, তাই ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে না বলেই ধরে নেয়া যায়।

তৃতীয়ত, তারকা প্রার্থীরা জিতে গেলে তাদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থের ওপরও দলের অধিকার থাকে। কিন্তু সবচেয়ে জরুরি কারণ ‘কঠিন’ লড়াইয়ে তাদের এগিয়ে দেওয়া। বিশেযত, ‘হারা’ আসনে।

যদি তারা তাদের জনপ্রিয়তা দিয়ে সেগুলো জিততে পারেন তাহলে সেটা উপরি পাওনা। হারলেও কোনো ক্ষতি নেই। যেমন তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় অভিনয় জগতের নয়জন তারকাকে যে নয়টি আসনে টিকিট দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটিতে গত লোকসভা ভোটের ফলাফলে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সে অর্থে তারা ‘বলির পাঁঠা’।

কারণ, অভিনেতা-অভিনেত্রী-পরিচালকের পাশাপাশি অন্য যে দুটি আসনে এক প্রাক্তন ফুটবলার এবং এক প্রাক্তন ক্রিকেটারকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল, সেই দুটি আসনেই লোকসভা ভোটে এগিয়েছিল শাসক শিবির।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ার মতো কঠিন আসনে মুনমুন সেনকে লড়তে পাঠিয়েছিলেন মমতা। তৃণমূলের অতি সমর্থকও আশা করেননি, দীর্ঘদিনের সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াকে হারিয়ে দেবেন অভিনেত্রী এবং রাজনীতিতে একেবারেই আনকোরা এবং অনভিজ্ঞ মুনমুন। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে সেই মুনমুনকেই তার জেতা আসন বাঁকুড়া থেকে সরিয়ে আনা হয়েছিল হারা আসন আসানসোলে।

বাবুল সুপ্রিয়কে হারাতে পারেননি মুনমুন। তারপর থেকে আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি তাকে।

কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় গ্ল্যামার জগতের এত মুখ দেখে আবার সেই জল্পনাই ঘুরেফিরে আসছে। সংশ্লিষ্ট তারকারা অবশ্য প্রত্যাশিতভাবেই সেই সম্ভাবনা খারিজ করেছেন।

তৃণমূলের হয়ে মেদিনীপুরে ভোট লড়বেন অভিনেত্রী জুন মাল্য। তার কথায়, ‘আমি তারকা নই। আমার তারকা ইমেজকে ব্যবহার করে তৃণমূল ভোট টানছে না। আর তৃণমূল আমাকে বলির পাঁঠা করে যেখানে খুশি দাঁড় করিয়ে দেবে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

কৌতুকাভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে টিকিট দেওয়া হয়েছে উত্তরপাড়ায়। তিনি বলেন, ‘কালীঘাট এলাকায় জন্ম বলে শুধু ওই এলাকাতেই আমি দাঁড়ানোর যোগ্য! আর সেটা না হলেই বলা হবে, আমাকে বলির পাঁঠা করা হল! এটা কী অসম্মান! মুখ্যমন্ত্রী জানেন, কাঞ্চন মল্লিক সাধারণের খুব কাছের। দ্রুত সকলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। তাই ভরসা করে আমাকে উত্তরপাড়ার দায়িত্ব দিয়েছেন।’

একই কথা বলছেন ধারাবাহিকের অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের প্রার্থী লাভলি মৈত্র। তিনি বলেন, ‘আমি ধারাবাহিকে কাজ করলেও আসলে ঘরের মেয়ে। ইন্ডাস্ট্রির মানুষকে ইচ্ছে মতো কেন্দ্রে প্রার্থী করে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তৃণমূলে একজনই প্রার্থী। তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা তার সৈন্য।’

দৈনিক চাঁদনী বাজার  / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে