খাশোগি খুনের তদন্তকারীকে হত্যার হুমকি সৌদি কর্মকর্তার
জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যাগনেস ক্যালামার্ডকে সৌদি আরবের এক কর্মকর্তা হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয়। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড তদন্ত করায় তাকে এই হুমকি দেয়া হয়।
অ্যাগনেস ক্যালামার্ডের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানে বলা হয়, তিনি যদি খাশোগি হত্যার তদন্তের লাগাম না টানেন তাহলে তার ‘ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে ক্যালামার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল রয়টার্সকে বলেন, ‘অ্যাগনেস ক্যালামার্ডকে হুমকি দেয়া নিয়ে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের তথ্য সঠিক বলে আমরা নিশ্চিত করেছি।’
গার্ডিয়ানকে ক্যালামার্ড বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জেনেভায় সৌদি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাকে এই হুমকি দেয়া হয়। তিনি বলেন, ঘটনাটি জাতিসংঘের এক সহকর্মী তাকে জানিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ক্যালামার্ড এক প্রতিবেদন জমা দেন যেখানে তিনি উপসংহার টানেন, ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান ও জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ রয়েছে।
এর পরপরই তিনি সৌদি প্রিন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তার আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা সীমিত করার আহ্বান জানান।
গার্ডিয়ান জানায়, জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা বলেছিলেন যে, ক্যালামার্ডের ‘ব্যবস্থা নেয়ার জন্য’ প্রস্তুত লোকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।
ক্যালামার্ড বলেন, ‘একটি হত্যার হুমকি। এটি এভাবেই বোঝা গেল।‘
তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে যারা উপস্থিত ছিল তারা তখন এবং পরবর্তীকালেও ওই সৌদি প্রতিনিধিকে পরিষ্কারভাবে জানান যে এটা পুরোপুরি অনুপযুক্ত।’
উল্লেখ্য, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, জামাল খাশোগিকে হত্যায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান অনুমোদন দিয়েছিলেন।
তবে খাশোগি হত্যায় যুবরাজ সালমানের জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে আসছে সৌদি প্রশাসন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন