প্রকাশিত : ১৫ জুন, ২০২১ ১০:৫৩

চীনকে ন্যাটোর হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক
চীনকে ন্যাটোর হুঁশিয়ারি

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে ন্যাটো সম্মেলন। সোমবার সম্মেলন শুরুর প্রথম দিনই আলোচনার কেন্দ্রে চীন। এসময় ন্যাটো নেতারা চীনের সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতাকে সতর্ক করেছেন। নেতারা বলেন, চীন নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার সাথে দেশটির সামরিক ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, যাকে সারাবিশ্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টেলটেনবার্গ বলেন, চীনের সাথে কোন ধরনের স্নায়ুযুদ্ধে যেতে চায় না ন্যাটো।

মূলত সম্মেলন শুরুর আগে থেকেই চীনকে সতর্ক করে আসছে ন্যাটে। রোববার জোটটির প্রধান জেনস স্টেলটেনবার্গ বলেন, বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান উত্থান ঠেকাতে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, চীনের বিরুদ্ধে ন্যাটোকে আরও শক্তিশালী নীতি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

কানাডার রাষ্টীয় গণমাধ্যম সিবিসি-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, চীনের সামরিক খাতের বাজেট বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশটির নৌবাহিনী বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী। চীন ধীরে ধীরে সামরিক খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, যা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টেলটেনবার্গ বলেন, চীন বিশ্বশান্তি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়। হংকংয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে চীন। আটক করা হয়েছে হংকংয়ের আন্দোলনকর্মীদের। অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর, কাজাখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের। বন্দী শিবিরে আটক রাখা হয়েছে সংখ্যালঘু মুসলিমদের। একই সঙ্গে চীন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজ দেশের নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। চীনের এমন আচরণকে মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলছেন ন্যাটো প্রধান।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করে চীন। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় চীনকে এখনই কার্বন নিঃসরণের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন, ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টেলটেনবার্গ। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগর ব্যবহারে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ন্যাটো মহাসচিব।

এদিকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীনে আটক কানাডার দুই নাগরিকের মুক্তি দাবি করেছেন জেনস স্টেলটেনবার্গ। তিনি বলেন, মাইকেল কোভরিগ ও মাইকেল স্পাভরকে আটক রাখার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। চীনের এসব দমন নিপীড়ন নীতি ন্যাটোর সাথে সাংঘর্ষিক। ন্যাটো মহাসচিব দাবি করেন, চীনকে এসব নিপীড়ন এখনই বন্ধ করতে হবে।

ন্যাটোর আগে চীনের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছিল জি-৭। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে শেষ হওয়া সম্মেলনে চীনকে ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে জোটটি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) বিকল্প আরেকটি প্ল্যাটফর্ম বাস্তবায়নের উদ্যোগ। যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবে ধনী দেশগুলোর এই জোট।

সূত্র: বিবিসি

দৈনিক চাঁদনী বাজার /  সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে