প্রকাশিত : ১২ জুলাই, ২০২১ ১৬:০২

বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল দ. আফ্রিকা, ব্যাপক লুটপাট-অগ্নিসংযোগ

অনলাইন ডেস্ক
বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল দ. আফ্রিকা, ব্যাপক লুটপাট-অগ্নিসংযোগ

সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে জেলে পাঠানোর জেরে দক্ষিণ আফ্রিকার দুইটি প্রদেশে সহিংসতা শুরু হয়েছে। জুমা-সমর্থকরা রাস্তঘাট অবরুদ্ধ রেখে দোকানে লুটপাট করছে। গত সপ্তাহ থেকে জ্যাকব জুমার নিজের এলাকা কোয়াজুলু-নাটাল এবং গৌতেং প্রদেশ থেকে এ সহিংসতা শুরু হয়। পরবর্তীতে সেটি দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম শহর জোহানেসবার্গেও ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ রোববার জানিয়েছে, এ ঘটনায় কমপক্ষে ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশের মেজর জেনারেল মাথাপেল পিটারস জানান, জোহানেসবার্গের কাছেই আলেক্সজান্দ্রা এবং ব্রামলেতে কয়েকশ’ লোক দোকান লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়। এরকম একটি দোকান থেকে ৪০ বছর বয়সী একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি জানান, লুটপাটকারীদের গ্রেফতারের সময় তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন এবং একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জোহানেসবার্গের সংযোগ সড়ক এন৩ এবং উপকূলীয় কোয়াজুলু-নাটাল’র দুরবান শহরের রাস্তাগুলো কয়েকঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখা হয়। এমনকি জ্যাকব জুমা যে জেলে বন্দি, সেখানকার রাস্তাও বন্ধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা।

দেশটির প্রেসিন্টে সাইরিল রামাফোসা গত রোববার জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে করোনার বিধিনিষেধ পালনের প্রতি মনোযোগ দিতে বলেছেন। পাশাপাশি, জীবন এবং অর্থনীতি ধ্বংস করে এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থেকে সবাইকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তবে প্রেসিডেন্টের আহ্বানের পরেও দুরবান এলাকার বিভিন্ন জায়গায় এখনো লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া দুটি রাজ্যেই পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। যারা সমামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত সপ্তাহ থেকে ১৫ মাসের সাজা ভোগ করতে শুরু করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। দুর্নীতির তদন্তকারীদের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা না করায় তাকে এ দণ্ড দেন আদালত। এরপরও তিনি আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানালে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত গ্রেফতারের সময়সীমা বেঁধে দেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। পরে অবশ্য জুমা ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জুমা এর আগে বলেছিলেন, ‘আমি জেলে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু, এই বয়সে মহামারির সময়ে জেলে পাঠানোর মানে হচ্ছে আমার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।’ তিনি আরও দাবি করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য। তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এরপর নানা নাটকীয়তা শেষে ৭৯ বছর বয়সী নেতা আত্মসমর্পণ করেন।

সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে