তালেবানকে চাপে ফেলতে কাতারে যাচ্ছেন মার্কিন দূত
চলতি সপ্তাহে কাতারে সফর করবেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জালমে খলিলজাদ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবানের সামরিক আগ্রাসন বন্ধে চাপ দিতেই তার এই সফর। আফগানিস্তানে আগ্রাসী হয়ে একের পর এক শহর দখল করে নিচ্ছে তালেবান। অপরদিকে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন শহরের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে লড়াই করে যাচ্ছে আফগান বাহিনী।
দু'পক্ষের এই সংঘাতে শিশুসহ বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুত গতিতে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটছে তার বিরুদ্ধে একটি যৌথ আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া প্রণয়নে সহায়তা করতে দোহায় সফর করবেন রাষ্ট্রদূত খলিলজাদ।
পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে তিনদিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি পরিকল্পিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সহিংসতা বন্ধ, যুদ্ধবিরতি এবং জোর করে ক্ষমতা দখল করে নেয়া কোনো সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আঞ্চলিক ও এর বাইরের বিভিন্ন দেশগুলোর পাশাপাশি বহুপক্ষীয় সংস্থার প্রতিনিধিরা তালেবান ও সংশ্লিষ্ট্র পক্ষকে চাপ দেবে বলে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমেই একমাত্র যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গেই কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, গত সোমবার তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা আফগানিস্তানের আরও একটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে। চারদিনের মধ্যে এ নিয়ে ৬টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে তারা।
সবশেষ উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সামাঙ্গানের রাজধানী আইবাক দখলে নিয়েছে তালেবান। এর আগে রোববার উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুন্দুজ দখলের পর সার-ই পাল এবং তালোকান শহরও তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। কুন্দুজ শহর দখল তালেবানের জন্য চলতি বছরের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তার আগে গত শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ দখল করে তালেবান। জারাঞ্জ হচ্ছে ইরান সীমান্তের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক বাণিজ্য কেন্দ্র। এই শহরের চারিদিকের এলাকা দখল করে নেয়ার পর তালেবান আরও সামনে অগ্রসর হতে শুরু করে।
এদিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত তিন দিনে কমপক্ষে ২৭ শিশু নিহত হয়েছে। অপরদিকে প্রায় এক মাস ধরে চলা সহিংসতায় এক হাজারের বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছে। সোমবার এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ বলছে, শিশুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা দিন দিন বাড়ছেই। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত তিন দিনে কান্দাহার, খোস্ত এবং পাকতিয়ায় ২৭ শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও ১৩৬ শিশু আহত হয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন