পাঞ্জশির থেকে স্যুটকেসভর্তি ডলার উদ্ধার করেছে তালেবান
তালেবানরা সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাব অনুসন্ধান শুরু করেছে। এসব কর্মকর্তারা অবৈধভাবে বিপুল অর্থ কুক্ষিগত করেছিল বলে দাবি তালেবানের।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সরকার ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। বিশেষকরে জনগণের জন্য আসা বিদেশি সহায়তার লাখ লাখ ডলার লুটপাট করেছে গনি সরকারের প্রশাসন।
স্বয়ং গনি ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ’র বিরুদ্ধেও এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে।
ইতোমধ্যে পাঞ্জশির উপত্যকায় সালেহ’র বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সোনাদানা উদ্ধার করেছে তালেবান।
জিয়ো নিউজ জানিয়েছে, সালেহ’র বাড়িতে ৬৫ লাখ ডলার পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটির নেতারা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ৩৬ লাখ ছয় হাজার ৮২০ টাকা।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কয়েকজন তালেবান কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, তালেবান যোদ্ধারা মাটিতে বসে স্যুটকেসে থাকা নগদ অর্থ ও সোনার বার গণনা করছেন।
অর্থ গণনাকারী এক যোদ্ধা বলেন, তালেবানের হাতে পাঞ্জশির উপত্যকার পতনের পরের দিন তারা প্রায় এক লাখ মার্কিন ডলার উদ্ধার করেছেন। আর পরের সময়ে তল্লাশি চালিয়ে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার ও ১৮টি সোনার বার উদ্ধার করেন।
এর আগে তালেবান দাবি করেছিল, ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুলের দখল নিলে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় আশরাফ গনি ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের সম্পদ সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন।
পাঞ্জশির থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ এ মুহূর্তে আফগানিস্তানে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরাবে। কারণ দেশটিতে এ মুহূর্তে নগদ অর্থের সংকট প্রকোট।
আশরাফ গনি সরকারের অসীম দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে এমনিতে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়।
এর মধ্যে তালেবান সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ অর্থসহায়তা বন্ধ করে দেওয়ায় আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট আরও নাজুক হয়েছে। খাবার ছাড়াও অর্থের অভাবে পড়েছে লাখ লাখ আফগান। এখন দেশটিতে এক ব্যক্তি দিনে ২০০ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ উত্তোলন করতে পারেন।
ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ নিজেদের বাসার কার্পেট, ফ্রিজ, কুশন, ফ্যান, বালিশ, কম্বল, চামচ, থালাবাটি, পর্দা, বিছানার চাদর, ম্যাট্রেস, হাঁড়িপাতিল, থালাবাসন রাখার শেলফ বিক্রি করে দিচ্ছেন। প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিও বেচে দিচ্ছেন তারা।
দুবেলা খাবারের টাকা জোগাড়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি অনেকটা পানির দরে বিক্রি করছেন তারা।
তালেবানের কাবুল দখলের আগে থেকেই আফগানিস্তানে এক কোটি ৮০ লাখ লোক ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখন এর ব্যাপী আরো অনেক বেড়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন